চটকল বন্ধ হওয়ার পর কেটে গিয়েছে দেড় মাস। কর্মহীন হয়ে ৬০০ জন শ্রমিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন ইতিউতি। অন্য দিকে, শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যায় শিল্প সম্মেলন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারই সেই সম্মেলনে কোচবিহারের হোটেল ব্যবসায় ৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন তৃণমূল নেতা ভূষণ সিংহ। কোচবিহারে হোটেল ব্যবসায় ৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্যবসায়ী তথা তৃণমূল নেতা ভূষণ সিংহ। কিন্তু চটকল পড়ে রইল বন্ধই।
চটকল কবে খুলবে? আদৌ খুলবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছেন প্রশাসনের কর্তারাই। বিরোধীদের অভিযোগ, বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি চটকল খুলতে তত্পর নয় প্রশাসনও। সেখানে নতুন শিল্পের কথা ভাঁওতা ছাড়া কিছু নয়। শ্রম দফতরের পক্ষে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ওই চটকল খোলা হবে। মালিকপক্ষের অসহযোগিতার জন্য আলোচনা এগোচ্ছে না। প্রয়োজনে এবার আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সহকারি শ্রম কমিশনার সুমন্ত রায় বলেন, “চারটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বারবার মালিকপক্ষকে চিঠি দিয়ে বৈঠকে থাকার জন্য আবেদন করা হয়েছে। একটি বৈঠকেও মালিকরা যোগ দেননি।” তিনি জানান, বৈঠকে কারখানার কয়েকজন কর্মীদের পাঠানো হচ্ছে। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে লাভ হচ্ছে না। এবার আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নোটিশ পাঠিয়ে চটকল খুলতে বলা হবে। তা না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কয়েকদিনের মধ্যে চিঠি পাঠানো হবে।”
মালিকপক্ষের তরফে আইকে মল বলেন, “ওই চটকলের পিছনে বহু কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। আমরাও দ্রুত কাজ শুরু করতে চাই। শ্রমিকরা কাজ না করলে কীভাবে কি হবে?” পাশাপাশি তাঁর যুক্তি, “ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে মালিককে থাকতে হবে এমন কোনও কথা নেই। প্রতি বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন মালিকপক্ষ।” মিলের সিংহভাগ শ্রমিক শাসকদলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির সঙ্গে রয়েছেন। সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রাণেশ ধর বলেন, “শ্রমিক নিয়ে সমস্যা নেই। মালিক পক্ষের ভূমিকাই স্পষ্ট নয়।”
শ্রম দফতর সূত্রের খবর, গত বছরের ২৭ নভেম্বর সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিশ টাঙিয়ে চকচকা শিল্পকেন্দ্রের অন্যতম বড় ওই চটকল বন্ধ করে দেন মালিকপক্ষ। তাঁদের দাবি, শ্রমিকদের একটা অংশ কাজে যোগ দিচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন গড়ে লক্ষাধিক টাকার উত্পাদন মার খাচ্ছিল। বার বার অনুরোধ করেও কাজ না হওয়ায় মিল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সময় শ্রমিক সংগঠনগুলির বক্তব্য ছিল, শ্রমিকদের গড়ে ১৭০-২১০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। অথচ ন্যূনতম দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা দেওয়ার কথা। এছাড়াও প্রভিডেন্ট ফান্ডের ২০ লক্ষ টাকা জমা মালিকপক্ষ জমা দেয়নি বলে অভিযোগ।
জেলা তৃণমূলের কয়েক জন নেতা বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।” বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “শুধু শিল্প সম্মেলন বা বৈঠক না করে কাজের দিকে মন দেওয়া উচিত সরকারের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy