দেহব্যবসার আসর বসিয়ে ছবি তুলে ‘ব্ল্যাকমেল’-এর প্রতিবাদ করায় বুনিয়াদপুরে ছাপাখানা ব্যবসায়ী বিজন সরকারকে (৩৫) খুনের অভিযোগে এক মহিলা সহ দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সোমবার রাতে ওই দু’জনকে পুলিশ ধরে। গত শনিবার বালুরঘাট শহরের চকভবানী পাড়ার রথতলা এলাকায় তিন তলা ভবনের নীচে ওই ব্যবসায়ীর দেহ মেলে। পুলিশ তদন্তে নেমে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার ধৃতদের বালুরঘাট আদালতে তোলা হলে সিজেএম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত বিচারক গৌতম নস্কর জামিন নাকচ করে তাদের ৯ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
সরকারি আইনজীবী দেবাশিস মজুমদারের দাবি, “এক অভিযুক্ত কুমারগঞ্জের পানিতারা এলাকার বাসিন্দা। দু’বছর ধরে তিনি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারের প্রহরীর কাজ করছেন। একটি বাড়ির তিন তলায় এক যুবতীকে দিয়ে তিনি মধুচক্রের ঠেক বসিয়ে ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায় করতেন। গঙ্গারামপুর এলাকার বাসিন্দা অভিযুক্ত যুবতী ঘটনার দিন একইভাবে বুনিয়াদপুরের বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ীর কাছে মোটা টাকা দাবি করেন। তিনি আপত্তি জানান। তাতে রেগে গিয়ে অভিযুক্ত ওই দু’জন ওই ব্যবসায়ীকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে নীচে ফেলে দেন বলে অভিযোগ।”
মৃত্যুর আগে বিজনবাবু স্বীকারোক্তিতে ওই দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার কথা বলে গিয়েছেন বলে এদিন পুলিশ আদালতে জানিয়েছে।
বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ওই যুবতী বিজনবাবুকে ফোন করেছিলেন।” নিহতের দাদা সন্তোষবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, বালুরঘাটে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গলার সোনার চেন খুলে বিজনবাবু ওই ভবনের ছাদে একজনের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন বলে বেরিয়ে যান। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে ধৃতদের মোবাইলেও আপত্তিকর ছবি পেয়েছে।
এদিন আদালতে ধৃতরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযুক্তরা দাবি করেন, ওই ব্যবসায়ী বিজনবাবু টাল সামলাতে না পেরে ছাদ থেকে পড়ে যান। এদিকে ওই ঘটনার পর ওই বাড়ির মালিকের ভূমিকা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বালুরঘাট থানার কাছে শহরের প্রধান ব্যস্ত রাস্তার ধারে ওই ভবনের ছাদে কী করে দিনের পর দিন দেহ ব্যবসা চলছিল সেই প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। আইসি বিপুলবাবু জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে বাড়ির মালকিনকে নোটিস পাঠিয়ে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে। ওই ভবনের মালকিনের বক্তব্য, “বাড়িটির সামনে অংশ ভাড়া রয়েছে। ছাদের সিঁড়িও সম্পূর্ণ আলাদা। ফলে কে কখন আসা-যাওয়া করছে, তা নজর করার মত পরিস্থিতি ছিল না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy