পুজোর সময় জোড়াতালি দিয়ে জাতীয় সড়ক সংস্কারের কাজ করা হয়েছিল। মাসখানেক বাদেই সড়কের হাল ফের বেহাল হয়ে পড়ে। এবার ফের জোড়াতালি দিয়ে জাতীয় সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ী-সহ বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ ও সহ সংস্কারের জন্য ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল দেড় বছর আগে। এত দিনেও কেন মালদহের গাজল থেকে চাঁচলের চান্দোয়া দামাইপুর পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার সড়ক চওড়া করা বা নতুন করে তৈরি না করে বারবার জোড়াতালি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থার কথা দফতরের কর্তারা জানেন। প্রশাসনেরও অজানা নয়। সড়কটি সংস্কারের দাবিকে একাধিকবার পথ অবরোধ করে আন্দোলন হয়েছে। দফতরের গাফিলতির জন্যই বরাদ্দের পরও সড়কটি বেহাল হয়ে রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। স্থায়ী কাজ না করে জোড়াতালি দিয়ে কেন বারবার দায়সারা কাজ করা হচ্ছে প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে গাফিলতির অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করা হয়েছে।
পূর্ত দফতরের অধীনে ৭ নম্বর জাতীয় সড়ক দফতরের মালদহের এক আধিকারিক জানান, “প্রথমে ঠিকাদার না মেলায় কাজে সমস্যা হয়েছিল। এবার সেই সমস্যা মিটেছে। তবে রাস্তাটি চওড়া করার জন্য দু’পাশের বিদ্যুতের খুঁটি, টেলিফোনের লাইন, পিএইচ-এর পাইপলাইন-সহ জবরদখল সরানো দরকার। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে জন্য সময় প্রয়োজন। তাই দুর্ঘটনা এড়িয়ে যাতায়াতে স্বস্তি দেওয়ার জন্য গর্ত বুজিয়ে দ্রুত সড়ক সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। বাকি সমস্যা মিটলেই সড়ক চওড়া করার কাজে হাত দেওয়া হবে।
কিন্তু রাস্তা চওড়া করার জন্য যেখানে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল সেক্ষেত্রে বিদ্যুতের খুঁটি, টেলিফোনের লাইন যে সরানো দরকার, তা কর্তৃপক্ষ জানতেন। কেন ওই কাজ এতদিনেও এগিয়ে রাখা হয়নি সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। গাজলের কদুবাড়ি থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর পর্যন্ত জাতীয় সড়কের ৫৩ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে বিহারের সঙ্গে যোগাযোগকারী রাস্তা অবশ্য এখনও তৈরি হয়নি। প্রথম পর্যায়ে গাজল থেকে চান্দোয়া দামাইপুর পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার রাস্তা চওড়া-সহ তা নতুন করে তৈরির জন্য ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ মেলে। এখন সাড়ে ৫ মিটার চওড়া ওই রাস্তাটি ১০ মিটার চওড়া করা হবে। গাজল ও সামসির মধ্যে বসবে টোল প্লাজা। উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নুর বলেন, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। দ্রুত যাতে কাজ হয় তা দেখতে বলেছি।”
চাঁচলের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, “বিদ্যুতের খুঁটি সরালেই কাজ শুরু করা যাবে বলে পূর্ত দফতর জানিয়েছে। খুঁটি সরানোর খরচ বাবদ বিদ্যুত বন্টন কোম্পানিকে ৯০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। পূর্ত দফতর সেই টাকা দিলেই কাজ শুরু করে দেওয়া হবে বলে বিদ্যুত্ বন্টন কোম্পানির তরফে জানানো হয়েছে। দ্রুত যাতে সমস্যা মেটে সেদিকে আমরা নজর রেখেছি।” চাঁচল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক দীপঙ্কর রাম ও সামসি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অজয় শর্মা একযোগেই বলেন, সংশ্লিষ্ট দফতর সক্রিয় নয় বলেই অর্থ বরাদ্দের পরও বাসিন্দাদের ভুগতে হচ্ছে।