Advertisement
E-Paper

জল কমলেও ভয় ভাঙনের

কিছু নদীতে জল কমলেও মালদহে বিপদসীমার সামান্য নীচে দিয়ে বইছে গঙ্গা। বিপদ সীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে ফুলহার নদী। শুক্রবার ভুটান পাহাড় থেকে বয়ে আসা নদীগুলির জলে প্লাবিত হয়েছিল বিভিন্ন এলাকা। শনিবার সকাল থেকে নদীগুলির জল কমতে থাকলেও, গঙ্গা এবং ফুলহারে জল বাড়তে শুরু করে। সেই রাতেই দুই নদীতে লাল সর্তকতা জারি করা হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৪ ০১:৪৩
দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে জল বেড়েছে ধল্লা নদীতে। প্লাবিত হয়েছে নদী লাগোয়া চা বাগান এলাকা। ময়নাগুড়ির মৌয়ামারি এলাকায় দীপঙ্কর ঘটকের তোলা ছবি।

দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে জল বেড়েছে ধল্লা নদীতে। প্লাবিত হয়েছে নদী লাগোয়া চা বাগান এলাকা। ময়নাগুড়ির মৌয়ামারি এলাকায় দীপঙ্কর ঘটকের তোলা ছবি।

কিছু নদীতে জল কমলেও মালদহে বিপদসীমার সামান্য নীচে দিয়ে বইছে গঙ্গা। বিপদ সীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে ফুলহার নদী। শুক্রবার ভুটান পাহাড় থেকে বয়ে আসা নদীগুলির জলে প্লাবিত হয়েছিল বিভিন্ন এলাকা। শনিবার সকাল থেকে নদীগুলির জল কমতে থাকলেও, গঙ্গা এবং ফুলহারে জল বাড়তে শুরু করে। সেই রাতেই দুই নদীতে লাল সর্তকতা জারি করা হয়। রবিবার গঙ্গায় জল কমলেও ফুলহারে জল বেড়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ার অসংরক্ষিত এলাকা ছাড়াও সংরক্ষিত এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এদিন জরুরি বৈঠক করে প্রশাসন।

শনিবার থেকেই ফুলহারের জল দ্রুত বাড়তে শুরু করে। তারপর তা উপচে রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশাপাশি হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের ইসলামপুর ও দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫টিরও বেশি এলাকা প্লাবিত করেছে। জেলা সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার অমরেশকুমার সিংহ বলেন, “গঙ্গার জলস্তর বিপদসীমার মাত্র ৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে বইছে। আগামী ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টি হলে জলস্তর ফের বাড়তে শুরু করবে। সতর্কতা জারি রয়েছে।” বিপদসীমার সামান্য নীচে দিয়ে গঙ্গা বইতে থাকায় সতর্ক করা হয়েছে জেলা প্রশাসনকেও। চাঁচলের মহকুমাশাসক সঞ্জীব দে বলেন, “পরিস্থিতির দিকে লক্ষ রাখছি। সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে ত্রাণ মজুত করে রাখা হচ্ছে।”

জল বাড়ছে ফুলহারে। —নিজস্ব চিত্র

সেচ দফতর জানিয়েছে, নতুন করে বৃষ্টি হয়নি। সব নদীর জলই কমেছে। ফলে রবিবার দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা সকলেই ত্রাণ শিবির ছেড়ে রবিবার বাড়ি ফিরেছেন। শনিবার সন্ধ্যা থেকেই সংকোশ ও রায়ডাক ২ নদীর জল কমতে শুরু করে। কিন্তু সেই সঙ্গে ভল্কা, ধন্দ্রা পাড়া, রিটার্ন পাড়া, নিমাই পাড়া পশ্চিম চিকলিগুড়ি, সংকোশ, নিউল্যান্ডস চা বাগান এবং বনবস্তি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। আলিপুরদুয়ার সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কুমারগ্রামের ভাঙন রোধে ৩ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। গত দু’সপ্তাহে ধন্দ্রাপাড়ায় সংকোশের ভাঙনে পাঁচ গ্রামবাসীর ভিটেমাটি বাঁশবাগান, আম কাঁঠালের গাছ সহ ১৩ বিঘা জমি তলিয়ে গিয়েছে বলে প্রশাসনিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে।

অন্য দিকে, জলস্তর নামলেও রবিবার থেকে ভাঙন শুরু হয়েছে কোচবিহার এবং ডুয়ার্সে। প্রশাসন সূত্রের খবর, তুফানগঞ্জের রামপুরের নাজিরান দেউতিখাতায় সঙ্কোশ, ফেরসাবাড়িতে রায়ডাক ও গঙ্গাধর নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। ফলিমারি এলাকায় বক্সিরহাটের বিভিন্ন এলাকাতেও রায়ডাকের ভাঙন শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নাজিরান দেউতিখাতার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ইতিমধ্যে সেখানে বেশ কয়েক বিঘা কৃষি জমি নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। এলাকার বেশ কয়েকটি বসতি এলাকা এবং বাজার বিপন্ন হয়ে পড়েছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। ফেরসাবাড়ি, বক্সিরহাট এলাকায় এদিন থেকে নতুন করে ভাঙন শুরু হওয়ায় কোচবিহার সদরেও তোর্সার ভাঙনে বেশ কিছু এলাকায় জমিবাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। তুফানগঞ্জের শোলধুবরীতে ভাঙনে বিপন্ন হয়ে পড়েছে কালজানির বাঁধও। জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি সেচ বাস্তুকারেরা পরিদর্শন করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।”

রবিবার সেচ দফতরের কর্তাদের নিয়ে কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া তুফানগঞ্জ মহকুমার বলরামপুর, সরেয়ারপাড়, দাসপাড়া এলাকায় ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে যান। পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বক্সিরহাট, নাজিরান দেউতিখাতা ও লাগোয়া এলাকার ভাঙন পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন। সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “শোল ধুবরিতে ভাঙনে প্রায় ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙেছে। নদী যে ভাবে এগিয়ে আসছে গোটা বাঁধটাই উড়ে যেতে পারে।” এ দিন সদর মহকুমার কচুবন, চন্দনচৌড়া, কাড়িশাল, মধুপুর, খাগরা বাড়ি, টাকাগছের মতো বিভিন্ন ভাঙন প্রবণ এলাকা ঘুরে দেখেছেন সাংসদ রেণুকা সিংহও। রবিবার কুমারগ্রামের ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ দশরথ তিরকে। বাসিন্দাদের আতঙ্কের খুব একটা কারণ নেই বলে দাবি করেছেন উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান গৌতম দত্ত। তিনি বলেন, “ভাঙন মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। অর্থও বরাদ্দ রয়েছে। সব এলাকা থেকেই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।”

flood tea garden uttarbanga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy