পদে বহাল হওয়ার পর মাত্র বছরখানেক গড়িয়েছে। তার মধ্যেই উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক স্মিতা পাণ্ডেকে হঠাৎ বদলির নির্দেশে বিতর্ক তৈরি হয়েছে প্রশাসনিক মহলে। সমাজকল্যাণ দফতরের যুগ্মসচিব পদে পাঠানো হয়েছে স্মিতাদেবীকে। উত্তর দিনাজপুরের নতুন জেলাশাসক হচ্ছেন রণধীর কুমার।
কর্মী-আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, বিভিন্ন সময় দুর্ব্যবহারের নানা অভিযোগ উঠেছে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে। ডব্লিউবিসিএস অফিসারদের সংগঠনের মাধ্যমে ওই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর কানেও পৌঁছয়। তারই ভিত্তিতে স্মিতাদেবীকে বদলি করা হল। আবার অন্য একটি মহলের দাবি, স্মিতাদেবী দক্ষতার সঙ্গে উত্তর দিনাজপুরে কর্মসংস্কৃতি ফেরানোর চেষ্টা করেছেন।
স্মিতাদেবীর স্বামী অখিলেশ চতুর্বেদী দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার। স্মিতাদেবী ২০১৪-র ৩ ফেব্রুয়ারি উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকের দায়িত্ব পান। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মাস তিনেক আগে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার এবং নানা বিষয় নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে মতান্তরের অভিযোগ ওঠে। অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে অযথা হয়রানি, চাপ সৃষ্টি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগও জানানো হয় বলে খবর। অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক গঙ্গাধর দাস অবশ্য দাবি করেছেন, জেলাশাসকের বদলির নির্দেশ নিয়ে তিনি কিছুই জানেন না
স্মিতাদেবী অবশ্য বিতর্কে জড়াতে নারাজ। তাঁর কথায়, “কোনও মন্তব্য করব না। বদলির চাকরি করি। এর আগে উত্তর দিনাজপুর জেলায় একাধিক জেলাশাসক এক বছর বা তার কম সময় কাজ করেছেন। হাতে গুনে চার-পাঁচ জন জেলাশাসক দু’বছর বা তার কিছু বেশি সময় কাজ করেছেন। এটা নিয়ে কোনও বিতর্ক না হওয়াই ভাল।”
বিজেপির জেলা সভাপতি শুভ্র রায়চৌধুরীর অবশ্য দাবি, “প্রশাসনের অন্দরে দীর্ঘদিন ধরে চলা দুর্নীতি বন্ধ করেছেন জেলাশাসক। সে কারণেই আধিকারিকদের একাংশ রাজ্য সরকারের কাছে চিঠিচাপাটি করে জেলাশাসককে বদলি করালেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পালেরও দাবি, জেলাশাসক ব্যক্তিগত উদ্যোগে শিশুদের জন্য সস্তায় পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের উন্নয়ন-সহ সরকারি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প কার্যকর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মৎস্য বিষয়ক পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য জানান, জেলাশাসকের সঙ্গে তাঁদের ভাল সম্পর্ক। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী যেটা ভাল বুঝেছেন, করেছেন।”