রাজ্যের মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর পুত্র ঋতব্রতকে আইনজীবী নিয়োগ করা নিয়ে বিতর্কের জেরে বালুরঘাট পুরসভার পরিষেবামূলক ক্ষেত্রগুলিতে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও গত প্রায় একমাস ধরে ঝুলে রয়েছে বলে অভিযোগ। পুরসভা সূত্রের খবর, দলীয় কাউন্সিলরদের আপত্তিতে তা কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ। একতরফাভাবে আইনজীবী নিয়োগের পাশাপাশি চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহার বিরুদ্ধে পুরসভার অতিথিশালা, উৎসব ভবন, সভাগৃহ, জলের ট্যাঙ্কার, শববাহী গাড়ি সহ যাবতীয় পরিষেবারমূলক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের অভিযোগ তুলে দলের একাংশ কাউন্সিলরই আপত্তি জানান।
পুরসভার তৃণমূল দলনেতা তথা ভাইস চেয়ারম্যান রাজেন শীল বলেন, “দীর্ঘদিন পুরসভার বিভিন্ন পরিষেবামূলক ক্ষেত্রে ভাড়া বৃদ্ধি না হওয়ায় তা বাড়ানো নিয়ে কারও আপত্তি ছিল না। তবে যে হারে ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছে, তা অত্যাধিক বলে কাউন্সিলরদের আপত্তিতে সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। শীঘ্রই বোর্ডের সভা ডেকে সবকিছু পুনর্বিবেচনা করা হবে।” তবে চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহা একতরফা সিদ্ধান্তের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে পরিষেবামূলক ক্ষেত্রগুলিতে ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে। শীঘ্রই তা কার্যকর হবে।”
পুরসভা সূত্রের খবর, গত ২০ জুন পুরবোর্ডের সভায় চেয়ারপার্সনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাবে বৈঠকে উপস্থিত ১১ জন বাম কাউন্সিলর বিষয়টি পর্যালোচনা করে পরে সম্মতি জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে তৃণমূলের ১৪ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৫ জন অনুপস্থিত ছিলেন। অথচ গত ৭ জুলাই চেয়ারপার্সন পরিষেবা ক্ষেত্রগুলির ভাড়া বৃদ্ধির তালিকা সম্বলিত নির্দেশিকা জারি করেন বলে অভিযোগ। দলের একাংশ কাউন্সিলরের অভিযোগ, সকলের সঙ্গে আলোচনা না করেই নোটিস জারি করেন চেয়ারপার্সন। তৃণমূল কাউন্সিলর ব্রতময় সরকার, শঙ্কর দত্তেরা অভিযোগ করেন, “ভাড়া বৃদ্ধির পক্ষে আমরা সকলে। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রে কত পরিমাণ ভাড়া বাড়ানো হবে তা নিয়ে আলোচনাই হয়নি।”
প্রায় ৬০ বছর ধরে বালুরঘাট পুরসভার ক্ষমতায় ছিল আরএসপি। গত পুরভোটে ২৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ১৪টি আসনে জয়ী হয়। বামেরা পায় ১১টি আসন। গত ১০ মাসেই ক্ষমতাসীন তৃণমূলের পুরবোর্ডে দলীয় কাউন্সিলরদের মধ্যে নানা বিষয়ে মতবিরোধ শুরু হয়। সম্প্রতি ঋতব্রতবাবুকে আইনজীবী নিয়োগের ঘটনায় ক্ষোভ বিদ্রোহের আকার নেয়। তার আঁচ উন্নয়ন কাজেও পড়তে শুরু করেছে বলে অভিযোগ।
বালুরঘাট পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক উৎপল ভট্টাচার্য বলেন, “পরিষেবামূলক ক্ষেত্রে টাকা বৃদ্ধি হয়েছিল। নির্দেশিকাও বার হয়। চেয়ারপার্সনকে অনেক কাউন্সিলর তা পুর্নবিবেচনার জন্য অনুরোধ করায়, সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy