বছরভর স্থায়ী মন্দিরে ঘটপুজোর মধ্যে দিয়ে দেবী আরাধনা করেন রতুয়ার বাহারাল গ্রামের রায় পরিবার। দীপান্বিতা কালীপুজোয় প্রতিবছর নতুন মূর্তি গড়া হয়। রায় পরিবারের এই পুজো প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো। দেবী এখানে দক্ষিণাকালী রূপে পূজিতা হন। বাড়ির প্রাঙ্গণে মূর্তি তৈরি সম্পন্ন হলে গ্রামবাসী-সহ বাড়ির পুরুষ-মহিলারা শোভাযাত্রা করে মন্দিরের বেদিতে মূর্তি তোলেন। রীতি অনুযায়ী এই সময় শূন্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে প্রতিমাকে বরণ করে কালীপুজোর সূচনা হয়। প্রথা মেনে হয় পায়রা ও ছাগবলি। বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পরিবারের সদস্যরা আজও এই পুজোকে কেন্দ্র করে একত্রিত হন। এ পুজোর বিশেষত্ব হল, বিসর্জনের শোভাযাত্রায় এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন গোটা পথটা ঝাঁটা দিয়ে পরিষ্কার করে জল ছিটিয়ে দেন। মালদহের রায় পরিবারের এই পুজোকে কেন্দ্র করে গোটা গ্রামে তৈরি হয় সম্প্রীতির আবহ।
রায় পরিবারের পুজোর মতই মালদহের ঐতিহ্যবাহী কালীপুজো গুলোর মধ্যে অন্যতম রতুয়া ২নং ব্লকের আড়াইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবরজালা গ্রামের কালীপুজো। মন্দির গড়ে ওঠার পিছনে রয়েছে জনশ্রুতি এই যে, দেবী চৌধুরানি ও ভবানী পাঠক কালিন্দী নদী পথে জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুরে যাওয়ার সময় এখানেই নাকি রাত্রিবাস করেছিলেন। স্বপ্নাদেশ পেয়ে তাঁরা বিগ্রহ তৈরি করে পুজো করেন। অন্য একটি মতে, ঘন জঙ্গলে ছিল রাজপুত দস্যুদের ঘাঁটি। কালিন্দী নদীপথে যারা বাণিজ্য করতে যেত, তাদের ওপর হামলা চালাত দস্যুরা। ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে তারা কালীমূর্তির পুজো দিতেন। সেই থেকে নাকি এই পুজো চলে আসছে। বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন চৌধুরী পরিবারের সদস্যরা। মন্দিরে স্থায়ী মূর্তি নেই। প্রতি বছর নতুন মূর্তি গড়া হয়। বছরের অন্যান্য সময় দেবীর থানেই নিত্যপুজো হয়। চৌধুরীবাড়ির প্রাঙ্গণে মূর্তি তৈরি সম্পূর্ণ হলে পুজোর দিন পরিবারের মহিলারা প্রতিমা-কে বরণ করে, মন্দিরে নিয়ে আসেন। এই পুজোকে কেন্দ্র করে আশেপাশের এলাকা থেকেও বহু মানুষের সমাগম হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy