Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পাহাড়ে কোথায় গণনা হতে পারে দেখল কমিশন

দার্জিলিং পাহাড়ের তিন মহকুমার ভোট গণনার কেন্দ্র সমতল শিলিগুড়িতে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। তা নিয়ে নানা অভিযোগ পেয়ে আসরে নামল নির্বাচন কমিশন। সরকারি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কলকাতায় দেশের উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বিনোদ জুত্‌সিও এ ব্যাপারে খোঁজখবর করার নির্দেশ দেন।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৪ ০২:১৭
Share: Save:

দার্জিলিং পাহাড়ের তিন মহকুমার ভোট গণনার কেন্দ্র সমতল শিলিগুড়িতে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। তা নিয়ে নানা অভিযোগ পেয়ে আসরে নামল নির্বাচন কমিশন। সরকারি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কলকাতায় দেশের উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বিনোদ জুত্‌সিও এ ব্যাপারে খোঁজখবর করার নির্দেশ দেন। এর পরেই বুধবার দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিশনের পর্যবেক্ষকদের ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে, পাহাড়ে কোথায় ভোট গণনা কেন্দ্র গড়া যেতে পারে।

সে খবর পৌঁছেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা-সহ পাহাড়ের প্রায় সব কটি রাজনৈতিক দলের কাছেও। মোর্চা নেতাদের অভিযোগ, পাহাড় থেকে সমতলে গণনা কেন্দ্র সরানোর সিদ্ধান্তের আড়ালে যে ‘রাজনীতি’ থাকতে পারে, তা আঁচ করছে কমিশনও। সে জন্যই কমিশনের চাপের মুখে পাহাড়ে ভোট গণনা কেন্দ্র ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে জেলা প্রশাসন বাধ্য হয়েছে বলে মোর্চা নেতাদের দাবি।

যদিও দার্জিলিঙের জেলাশাসক পুনীত যাদব বলেছেন, “পাহাড়ে যেখানে এতদিন ভোট গণনা হতো, সেই সেন্ট যোসেফস কলেজ কর্তৃপক্ষ পুরো ভবন ব্যবহার করতে দেবেন না বলে মামলা করেছিলেন। মামলায় রাজ্য সরকার হেরেছে। অত বড় আর কোনও জায়গা পাহাড়ে মেলেনি। সে জন্য জাতীয় দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে সর্বদল বৈঠক করে গণনা কেন্দ্র শিলিগুড়িতে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়। এখন কমিশন চাইলে সেই সিদ্ধান্ত বদলাতে পারে।” সেই সঙ্গে জেলাশাসকের দাবি, “প্রশাসন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পর্যবেক্ষকদের কোনও জায়গা দেখায়নি। পাহাড়ের একাধিক রাজনৈতিক দল ভোট গণনা কেন্দ্র কোথায় গড়া যেতে পারে তা নিয়ে কমিশনকে জানিয়েছে। আমরা সেগুলোই পর্যবেক্ষকদের দেখিয়েছি। ওঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।”

এই ঘটনায় দার্জিলিঙের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে আলোড়ন পড়েছে। কারণ, গত মাসে দার্জিলিঙের জেলাশাসক পাহাড় থেকে ভোট গণনা কেন্দ্র সরিয়ে শিলিগুড়ি কলেজে করার সিদ্ধান্ত নিলে মোর্চা-সহ পাহাড়ের নানা দল প্রতিবাদে সরব হয়। এমনকী, জেলা প্রশাসনের ডাকা সর্বদল বৈঠকও বয়কট করে তারা। সব কটি দলই নির্বাচন কমিশনকে নালিশ জানায়। মোর্চার তরফে সহকারী সাধারণ সম্পাদক জ্যোতি কুমার রাই চিঠি দিয়ে জেলাশাসকের কাছে কেন পাহাড় থেকে সমতলে ভোট গণনা কেন্দ্র সরানো হল তা জানতে চান। মোর্চার অন্দরের খবর, চিঠির জবাবে জেলাশাসক মামলায় হার ও অন্যত্র খোলা জায়গায় গণনা কেন্দ্র গড়তে বাড়তি খরচের যুক্তি দেন। এর পরেই মোর্চার সঙ্গে বিজেপির সমঝোতা হয়। বিজেপির সর্বভারতীয় নেতারাও ওই সিদ্ধান্ত যে যুক্তিযুক্ত নয়, তা বোঝানোর চেষ্টা করেন। মোর্চা-সমর্থিত বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া বলেন, “পাহাড়ে কত জায়গা রয়েছে। সেখানে অস্থায়ী মন্ডপ করে গণনা হতে পারে। ভোটের কাজে কমিশনের টাকার অভাব হয় বলে তো আমার জানা নেই। এ সব যুক্তি ধোপে টিঁকবে না।”

মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিনয় তামাঙ্গের অভিযোগ, ওই সিদ্ধান্তের একটা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। তাঁর আশঙ্কা, পাহাড় থেকে সমতলে গণনা কেন্দ্র সরানো হলে কারচুপি হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE