বালুরঘাটে বামেদের টপকে দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। বালুরঘাট লোকসভা আসনে বিধানসভা ভিত্তিক ফলের ভিত্তিতে দেখা গিয়েছে শুধু বালুরঘাট-ই নয় তপন বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের পরের স্থান বিজেপির। বালুরঘাট শহরে তৃণমূলের চেয়ে বিজেপি প্রায় ১৯০০ ভোট বেশি পেয়েছে। কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে বাকি ৫টি বিধানসভা কেন্দ্রেও বিজেপি ব্যাপক হারে ভোট টেনে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। এমনকী, রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী তথা তৃণমূল বিধায়ক শঙ্কর চক্রবর্তীর খাস তালুক বালুরঘাটে বিজেপির উত্থানের ঘটনায় দলীয় নেতৃত্ব অস্বস্তিতে পড়েছেন। এই লোকসভা আসনের অধীন দক্ষিণ দিনাজপুরের ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তৃণমূলের সবচেয়ে খারাপ ফল হয়েছে বালুরঘাটেই।
সার্বিক ভাবে বালুরঘাট বিধানসভা কেন্দ্র থেকে মাত্র ২১৯৩ ভোটের লিড পেয়েছেন অর্পিতা ঘোষ। কিন্তু শহরে কেন পিছিয়ে? বিষয়টি নিয়ে দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয়েছে চাপান-উতোর। গত ২০১১ সালে বালুরঘাট থেকে মন্ত্রী শঙ্করবাবু ১৮ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে আরএসপির প্রাক্তনমন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরীকে হারান। এর পর গতবছর পঞ্চায়েত ভোটেও বালুরঘাটে সব পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের আসন জিতে বিপুল সাফল্য পায় তৃণমূল। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই কী এমন ঘটনা হল যাতে দলের এই অবস্থা, তা নিয়ে দলের ভিতরে পর্যলোচনা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “বালুরঘাটে দলের ফল খারাপ হয়েছে কেন এমন হল, তা নিয়ে শীঘ্রই আমরা আলোচনায় বসব।”
বালুরঘাটে দলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে বিরক্ত মানুষের একটা অংশ বিজেপির দিকে ঝুঁকেছেন, তা তৃণমূলের একাংশ নেতা অস্বীকার করেননি। তাঁরা বলেন, “বালুরঘাট শহর থেকে এ বারে প্রায় ১৯০০ ভোটে এগিয়ে বিজেপি। অথচ ৬ মাস আগে বালুরঘাট পুরসভা দখল করে তৃণমূল।” প্রচারের ধরন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন জেলার একাংশ নেতৃত্ব। তাঁরা জানান প্রার্থীকে গঙ্গারামপুর, ইটাহার, হরিরামপুর, কুশমন্ডিতে বেশি প্রচার করানো হয়েছে। বালুরঘাট ও তপনে জোর না দেওয়ায় এই অবস্থা। দলীয় কোন্দলকেই দায়ী করা হয়েছে।
বালুরঘাট বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ৪০,২৬৬ ভোট পান। বিজেপি ৩৮,০৭৩ ভোট। আরএসপি ৩৬,৬৯৪ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে। কংগ্রেস প্রার্থী ভোট পেয়েছেন মাত্র ১১,২৮০। পাশাপাশি তপন বিধানসভা কেন্দ্রের চিত্রটা অনুরূপ। তপনে তৃণমূল প্রার্থী ভোট পেয়েছেন ৫৪,৮৮৮। আর বিজেপির ঝুলিতে পড়েছে ৪২,৮৭৩, আরএসপি ভোট পেয়েছে ৪১,১৯৭টি। স্বভাবতই জেলায় অন্তত দুটি কেন্দ্রে তৃণমূলের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলতে পেরে বিজেপি নেতৃত্ব উৎসাহীত। দলের জেলা সভাপতি গৌতম চক্রবর্তী বলেন, “জেলায় আমাদের সাড়ে পাঁচ শতাংশ থেকে ভোট বেড়ে হয়েছে সাড়ে ১৭ শতাংশ। জেলা সদর বালুরঘাট ও তপন কেন্দ্রের সাফল্যকে সামনে রেখে জেলা জুড়ে বুথ ভিত্তিক সংগঠনকে ঢেলে সাজা হবে।” তিনি বলেন, “দিল্লিতে দলের সরকার এবং দার্জিলি-এর সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়ার উত্তরবঙ্গের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনার সুবাদে জেলার উন্নয়নের সুযোগ আমরা পাব। মানুষের সঙ্গে আরও যোগাযোগ বাড়বে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy