Advertisement
E-Paper

বধূর দেহ রেখে থানায় বিক্ষোভ

স্বামীর বিরুদ্ধে প্রায় দু’মাস আগেই পুলিশে নির্যাতনের অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্ত্রী। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। দু’সপ্তাহ বাদে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন স্বামী। তার পরেও পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ উঠেছে। ন’দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে সোমবার সকালে অগ্নিদগ্ধ ওই বধূর মৃত্যু হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:২৮

স্বামীর বিরুদ্ধে প্রায় দু’মাস আগেই পুলিশে নির্যাতনের অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্ত্রী। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। দু’সপ্তাহ বাদে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন স্বামী। তার পরেও পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ উঠেছে। ন’দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে সোমবার সকালে অগ্নিদগ্ধ ওই বধূর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরেই পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার পাশাপাশি হয়রানির অভিযোগ তুলে থানার সামনে দেহ রেখে বিক্ষোভ শুরু করলেন মৃত বধূর আত্মীয় সহ বাসিন্দারা।

মালদহের রতুয়া থানায় সোমবার সন্ধ্যায় বিজেপির নেতৃত্বে ওই বিক্ষোভ হয়। সোমবার সকালে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তৃপ্তি সিংহ (৩৫)। অভিযোগ, গত ১৫ নভেম্বর দুপুরে তাঁর গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে স্বামী রতন। পুলিশ জানিয়েছে, রতুয়া থানার কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা রতন ওই ঘটনার পর থেকেই পলাতক। চাঁচলের এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য অবশ্য পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, “অভিযুক্তের খোঁজে একাধিকবার তল্লাশি চালালেও তার খোঁজ মেলেনি।”

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৭ বছর আগে কাহালা নরোত্তমপুরের বাসিন্দা তৃপ্তিদেবীর সঙ্গে রতন সিংহের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তৃপ্তিদেবী অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা পদে কাজ করতেন। স্বামী রতন ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করলেও কিছুদিন ধরে বাড়িতেই ছিল। তার কোনও কাজও ছিল না।

মৃতার পরিজনের অভিযোগ, স্বামী রতন সিংহ কোনও কাজের চেষ্টাও করত না। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী স্ত্রীর টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মদ্যপ অবস্থায় তার উপরে নির্যাতনও চালাত সে। পড়শিরাও জানিয়েছেন, স্ত্রীর টাকা দাবি করে প্রায়শই রতন অশান্তি বাধাত। ২৮ সেপ্টেম্বর তৃপ্তিদেবী স্বামীর বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় নির্যাতনের অভিযোগ জানান। তার পরেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। পরিজনেরা জানান, তৃপ্তিদেবী পুলিশে অভিযোগ জানানোর পর থেকেই তাঁর উপর নির্যাতন আরও বাড়ে। এর পরে ১৫ তারিখ তার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে রতন আগুন দিয়ে দেয় বলে অভিযোগ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মৃতার দাদা জয় সিংহের ক্ষোভ, “পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিলে বোনকে এভাবে মরতে হতো না।” ২৮ সেপ্টেম্বর নির্যাতনের অভিযোগ হওয়ার পরেও পুলিশ ১৫ দিনে কোনও ব্যবস্থা নিল না কেন? রতুয়া থানার ওসি রাজু খোন্দকার বলেন, “অভিযুক্তকে খুঁজতে যাওয়া হলেও পাওয়া যায়নি।” মৃতার পরিজনদের পাল্টা প্রশ্ন, “অভিযুক্ত নিখোঁজ থেকে কী ভাবে ১৫ তারিখ এসে তৃপ্তিদেবীর গায়ে আগুন দিতে পারল? আসলে পুলিশ অভিযুক্তকে পালাতে সাহায্য করেছে।” তাঁদের আরও অভিযোগ, আগুন দেওয়ার ঘটনায় অভিযোগ জানানোর পরেও রতন মৃতার ভাইদের ফোনে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ মালদহ মেডিক্যাল থেকে ওই বধূর দেহ এনে থানার মূল ফটকের সামনে রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েকশো গ্রামবাসী। বিজেপির রতুয়া-১ ব্লকের সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত সিংহের দাবি, “ঘটনার আড়ালে কোনও রাজনীতি নেই। তার পরেও পুলিশ কেন অভিযুক্তকে ধরতে গড়িমসি করল সেটাই অস্পষ্ট। পুলিশের এমন ভূমিকা হলে মানুষ যাবে কোথায়? তাই ওদের পাশে দাঁড়িয়েছি।” রাত আটটা নাগাদ রতুয়ায় পৌঁছন এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য। তিনি অভিযুক্তকে ধরার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

chanchal firing death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy