ভারতীয় ছিটমহলে নিয়ে আসা হচ্ছে সেলিনার দেহ। —নিজস্ব চিত্র।
খুন হওয়ার আঠারো দিন পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পৌঁছল এক মহিলার দেহ। বৃহস্পতিবার নিহত মহিলার দেহ নিয়ে যাওয়া হয় মাথাভাঙা হাসপাতালের মর্গে। পুলিশ জানায়, নিহত সেলিনা বেগমের (২৪) বাড়ি ভারতীয় ছিটমহল ভোটবাড়িতে। ছিটমহলের বাসিন্দা হওয়াতেই ১৮ দিন ধরে তাঁর দেহ পড়েছিল বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলা হাসপাতালের ‘বেওয়ারিশ’ মৃতদেহ রাখার ঘরে।
এ দিনই ময়নাতদন্ত করে সেলিনার দেহ তুলে দেওয়া হয় তাঁর আত্মীয়দের হাতে। পরে তাঁর গ্রামেই সমাধিস্থ করা হয় তাঁকে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “ছিটমহল হওয়াতেই সেখানে আমরা পৌঁছতে পারিনি। কারণ দুই দেশের অনুমতি প্রয়োজন ছিল। রাজ্য সরকারের মাধ্যমে আমরা ভারত সরকারের কাছে বিষয়টি জানিয়ে দেহ আনার জন্য আবেদন করেছিলাম। সেই অনুমতি পাওয়ার পর এদিন দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পরই দেহ হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। এদিন দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী এবং পুলিশের উপস্থিতিতে দেহ মাথাভাঙা হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটির নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন,“এই একটি ঘটনা প্রমাণ করে দিল ছিটমহলের মানুষ কি অবস্থায় আছেন। একটি মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পৌঁছতে সময় নিল আঠারো দিন। সাধারণ মানুষের স্বার্থে ছিটমহল বিনিময় কতটা জরুরি তা এবারে সবাই বুঝতে পারবেন।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের ছিটমহল লালমনিরহাটের রুপারমারা কামারেরহাট এলাকার বাসিন্দা রুবেল হোসেনের সঙ্গে কয়েক বছর আগে সেলিনার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সেলিনার উপর অত্যাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। ২৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে সেলিনার ভাই এর অভিযোগ। ২৮ সেপ্টেম্বর মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ ওই ছিটমহলে ঢোকার চেষ্টা করলে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী অনুমতি দেয়নি। এর পরেই মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি উর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। দুই দেশের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হওয়ার পর বুধবার রাতে অবশেষে মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশের ওই দেশে যাওয়ার অনুমতি মেলে। এদিন দুই দেশের পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ফ্ল্যাগ মিটিং এর পর সেলিনার দেহ এপারে আনা হয়। খুনের অভিযোগে মহিলার স্বামী রুবেল হোসেনকে গ্রেফতার করে মেখলিগঞ্জের পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy