Advertisement
E-Paper

মেয়েকে ফেলে দেব, হুমকি দিয়ে ডাকাতি চাঁচলে

মেরে কেটে মাস আড়াই বয়স তার। মায়ের কোলে অকাতরে ঘুমোচ্ছিল। ছাদের শিকল খুলে নিঃশব্দে ঘরে ঢুকে ছোট্ট সেই মেয়েটিকেই কোলে তুলে নিয়েছিল ডাকাতরা। তারপর দোতলার খোলা বারান্দায় নিয়ে গিয়ে ঠান্ডা গলায় মা-বাবা’র কাছে প্রশ্ন রেখেছিল, ‘মেয়েটাকে কি নিচে ছুড়ে ফেলব, নাকি টাকাটা বের করে দিবি?’ শুক্রবার রাত প্রায় দেড়টা। চাঁচলের লাগোয়া সিহিপুর গ্রামের দাস বাড়িতে যে ডাকাত পড়েছে টেরই পাননি পড়শিরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৪ ০১:১০

মেরে কেটে মাস আড়াই বয়স তার। মায়ের কোলে অকাতরে ঘুমোচ্ছিল। ছাদের শিকল খুলে নিঃশব্দে ঘরে ঢুকে ছোট্ট সেই মেয়েটিকেই কোলে তুলে নিয়েছিল ডাকাতরা। তারপর দোতলার খোলা বারান্দায় নিয়ে গিয়ে ঠান্ডা গলায় মা-বাবা’র কাছে প্রশ্ন রেখেছিল, ‘মেয়েটাকে কি নিচে ছুড়ে ফেলব, নাকি টাকাটা বের করে দিবি?’

শুক্রবার রাত প্রায় দেড়টা। চাঁচলের লাগোয়া সিহিপুর গ্রামের দাস বাড়িতে যে ডাকাত পড়েছে টেরই পাননি পড়শিরা। ঘন্টা খানেক ধরে বাড়ি দাপিয়ে ডাকাতির পরে জনা দশেকের দলটি চলে যাওয়ার পরে বাড়ির লোকের চিৎকারে ঘুম ভাঙে সিহিপুরের। পুলিশের অনুমান, ডাকাতরা ততক্ষণে বিহার সীমান্ত পেরিয়ে গিয়েছে।

চাঁচল-স্বরূপগঞ্জ রাজ্য সড়কের গায়েই মিঠুন দাসের দোতলা বাড়ি। শুক্রবার গভীর রাতে সে বাড়িতেই তাঁর ছোট্ট মেয়েকে উপর থেকে ছুড়ে ফেলে খুনের হুমকির মুখে হাজার ত্রিশেক টাকা আর কিছু গয়না ডাকাতদের দিয়েছিলেন বাড়ির কর্তা। কিন্তু তাতে মন ভরেনি। বার বারই তারা খোঁজ করতে থাকে, ‘বল কোথায় রেখেছিস পাঁচ লাখ টাকা।’ পুলিশের অনুমান বড় অঙ্কের টাকার খবর পেয়েই তারা হামলা করেছিল। আর তা না পেয়েই বাড়ি লন্ডভন্ড করে। এ ব্যাপারে মিঠুনের পরিচিত কেউ জড়িত বলেই পুলিশের সন্দেহ। চাঁচলের এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকার পরিচিত কেউ জড়িত কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

অভিযোগ, ডাকাতরা হুমকি দিয়ে গিয়েছে, ‘পুলিশকে জানালে আগামী সপ্তাহে এসে শুধু লুঠ নয়, বাড়ির সকলের মাথা কেটে নিয়ে যাব’।

মিঠুন পেশায় ব্যবসায়ী। বাড়ির এক তলাতেই সারের দোকান। রয়েছে গুদামও। পরিবার নিয়ে মিঠুন থাকেন দোতলায়। পরিবার বলতে, স্ত্রী রিনা, মা আরতিদেবী আর ওই আড়াই মাসের কন্যা। মিঠুনের বাড়ির গা ঘেঁষেই উঠছে আরও একটি দোতলা বাড়ি। নির্মীয়মাণ সেই বাড়িতে উঠে পাঁচিল টপকে ডাকাতরা নেমেছিল মিঠুনের বাড়ির ছাদে। মিঠুন জানান, ডাকাতরা সকলেই মুখে কালো কাপড় বেঁধে এসেছিল। ঘরে ঢুকেই বাচ্চাটিকে তুলে নিয়ে তাঁদের উপরে চাপ দিতে থাকে তারা।

টাকা দিতে না পারায় কম্বলে মুড়ে মিঠুনকে পেটাতে শুরু করে ডাকাতরা। অজ্ঞান হয়ে যান ওই ব্যবসায়ী। বেগতিক দেখে ঘন ঘন জল ঢেলে মিঠুনের জ্ঞানও ফেরায় তারা। তবে জ্ঞান ফিরলেও পাঁচ লাখ টাকার হদিস দিতে না পারায় এ বার তাঁর মেয়েকে ‘কিডন্যাপ’ করার হুমকি দিতে থাকে ডাকাতরা। তাতেও কাজ না হওয়ায় নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এক সময়ে ফিরে যায়।

সিহিপুরে ডাকাতির ঘটনা নতুন নয়। মাস কয়েক আগেও বাড়ির দরজা ভেঙে ডাকাতির সাক্ষী চাঁচলের এই গ্রাম। সে ঘটনায় ধরা পড়েনি কেউ। এ বারও কি তারই পুনরাবৃত্তি হবে, জানতে চায় সিহিপুর।

chanchal robbery
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy