এক মহিলা যাত্রীকে ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক টিকিট পরীক্ষকের (টিটিই) বিরুদ্ধে। তারপরে শুক্রবার সকালে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গাজল থানার একলাখি। গুরুতর জখম ওই মহিলাকে প্রথমে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মাথায় আঘাত লাগায় রাতেই তাঁকে কলকাতায় ‘রেফার’ করা হয়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই এক মহিলা সহ চার টিকিট পরীক্ষককে ট্রেন থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে উত্তেজিত জনতা। ভাঙচুর চালানো হয় একলাখি স্টেশনে। তবে রেলের দাবি,অভিযোগ ভিত্তিহীন।
পুলিশ জানায় জখম মহিলার নাম বইফুল বিবি। শুক্রবার সকালে মেয়ে আমিরুন ও এক নাতনিকে নিয়ে আদিনা থেকে বালুরঘাট গৌড় লিঙ্ক এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন তাঁরা। বইফুল বিবির মেয়ে আমিরুন বিবির অভিযোগ, ট্রেনে ওঠার কিছুক্ষণ পরে চার জন টিকিট পরীক্ষক দরজার সামনে ঘিরে ধরেন তাঁদের। টিকিট চাওয়া হলে তাঁরা জানান, ট্রেন চলে আসায় টিকিট কাটতে পারেননি। তখন তাঁদের দু’জনকে মোট ৫১০ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু তাঁদের কাছে মাত্র ১০০ টাকা আছে বলার পরে এক টিকিট পরীক্ষক তাঁর মাকে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা দেন বলে তাঁর অভিযোগ। বাইরে পড়ে যান বইফুল বিবি।
ট্রেন একলাখিতে থামার পরে আমিরুন এই অভিযোগ করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে স্টেশন চত্বরে। স্বপনকুমার রায়, গোপাল মাঝি, রোহনপ্রসাদ রাম ও তনুশ্রী ঠাকুর নামের চার টিকিট পরীক্ষককে ট্রেন থেকে নামিয়ে মারধর শুরু করে জনতা। চলে স্টেশন ভাঙচুর। প্রায় দু’ঘণ্টা গোলমাল চলার পরে পুলিশ ও রেল রক্ষী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রেললাইন থেকে উদ্ধার করে জখম বইফুল বিবিকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে পুলিশ।
তবে রেলের তরফে দাবি, ওই মহিলা যাত্রীকে ধাক্কা দেওয়া হয়নি। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম অরুণকুমার শর্মা জানান, বিনা টিকিটের যাত্রীদের ধরার জন্য গত তিন দিন ধরে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু ট্রেনে পরীক্ষা চলছে। এদিনও ওই ট্রেনে চেকিং হচ্ছিল। তিনি বলেন, “ওই বিনা টিকিটের মহিলা যাত্রী ধরা পড়ে যাওয়ার পরে জরিমানা এড়াতে চলন্ত ট্রেন থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে যান। তখনই পড়ে গিয়েছেন তিনি।”
তবে ওই টিকিট পরীক্ষকদের মধ্যে তিন জনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলেও অন্যতম অভিযুক্ত রোহনপ্রসাদ রাম ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা হয়ে যান।