Advertisement
০৬ মে ২০২৪
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতি

স্থায়ী সমিতি বামেদের হাতেই

অনাস্থায় হেরে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ সভাপতি অপসারিত হওয়ায় বোর্ড হাতছাড়া হয়েছিল বামেদের। কিন্তু স্থায়ী সমিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে সব ক’টি স্থায়ী সমিতির দখল নিল সেই বামেরাই। অনাস্থার পরে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতিতে মঙ্গলবার ছিল স্থায়ী সমিতি গঠনের দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০৬
Share: Save:

অনাস্থায় হেরে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ সভাপতি অপসারিত হওয়ায় বোর্ড হাতছাড়া হয়েছিল বামেদের। কিন্তু স্থায়ী সমিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে সব ক’টি স্থায়ী সমিতির দখল নিল সেই বামেরাই। অনাস্থার পরে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতিতে মঙ্গলবার ছিল স্থায়ী সমিতি গঠনের দিন। বিরোধী কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে সভাপতি ও সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করে তাদের অপসারিত করেছিল দল ছেড়ে নির্দল হওয়া সাত বাম সদস্য। পরে কংগ্রেস ও নির্দল ওই জোটের সভাপতি ও সহ-সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছেন।

কিন্তু এ দিন ৯টি স্থায়ী সমিতি থেকেই দলত্যাগী সদস্যদের অপসারিত করে নতুন করে স্থায়ী সমিতি গঠন করেছে বামেরা। যার অর্থ সব ক’টি কর্মাধ্যক্ষই থাকল বামেদের দখলে। এক দিকে জোটের সভাপতি, সহ-সভাপতি পক্ষান্তরে সমিতির সব কর্মাধক্ষই বামেরা। এই পরিস্থিতিতে সমিতির বোর্ড চালানোয় চূড়ান্ত বিরোধের আশঙ্কাই নয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এলাকার উন্নয়ন ব্যাহত হবে বলেও বাসিন্দাদের পাশাপাশি আশঙ্কা প্রশাসনের। স্থায়ী সমিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় এ দিন জোটের সদস্যেরা হাজির ছিলেন না। তবে অনাস্থায় অপসারণের পরেও বামেদের স্থায়ী সমিতি গঠনকে অনৈতিক বলে দাবি করেছে তারা। হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বিডিও বিপ্লব রায় বলেন, “যা পরিস্থিতি, তাতে সমস্যা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু উন্নয়ন ব্যহত হবে কি না, তা বলার সময় এখনও আসেনি।” কিন্তু প্রশাসন যাই বলুক, গত তিন মাস ধরে পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতা দখলকে ঘিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাতে এলাকার উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে। অনাস্থাকে ঘিরে টানাপড়েন ছাড়া এলাকার সমস্ত উন্নয়ন এর মধ্যেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

সমিতি সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রথম বারের অনাস্থা প্রস্তাব আদালতের নির্দেশে বাতিল করে প্রশাসন। পরে ফের নতুন করে অনাস্থা পেশ করার পর তাতে সভাপতি অপসারিত হন। বিষয়টি নিয়ে অবশ্য বামেরা ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। প্রশাসন জানায়, নির্বাচিত ২১ সদস্যের মধ্যে জোটের পক্ষে ১২ জন ও বামেদের পক্ষে ৯ জন রয়েছেন। নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও স্থায়ী সমিতিতে বামেরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।

স্থায়ী সমিতিতে বিধায়ক, সাংসদ-সহ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত সব ক’টি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানরাও সদস্য। সেই হিসাবে স্থায়ী সমিতির ৩৩ জনের মধ্যে বামেদের ১৮ জন ও জোটের ১৫ জন সদস্য রয়েছেন। ফলে স্থায়ী সমিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় ৯টি স্থায়ী সমিতিই বামেরা গঠন করেছে। প্রশাসন জানায়, যে কোনও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য স্থায়ী সমিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার পর তা সভাপতি অনুমোদন করেন। আবার স্থায়ী সমিতিকে বাদ দিয়েও সভাপতি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। ফলে বাজেট থেকে শুরু করে যে কোনও উন্নয়ন থমকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।

সিপিএম ছেড়ে নির্দল হওয়ার পর জোটের সভাপতি হয়েছেন জয়শ্রী কর্মকার। তিনি বলেন, “অনাস্থায় হেরে অপসারিত হওয়ার পর বামেরা ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। তার পর যা করলেন তা গায়ের জোরে ক্ষমতার লোভেই করলেন। একই কথা বলেন জোটের কংগ্রেস দলনেতা রবিউল ইসলামও।”

যদিও পঞ্চায়েত সমিতির অপসারিত সভাপতি জামিল ফিরদৌস বলেন, “ক্ষমতার লোভে ওরা আদালতের নির্দেশও মানেনি। আদালত বলেছিল দলত্যাগী ৭ সদস্য চার সপ্তাহ অনাস্থায় অংশ নিতে পারবেন না। তার পরেও আমাকে ও সহ সভাপতিকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অপসারিত করা হয়েছে। তাই ফের আদালতে গিয়েছি। সমিতি চালাতে স্থায়ী সমিতি গঠন করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE