Advertisement
E-Paper

স্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে স্ত্রীকে হেনস্থা গ্রামে

স্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে এক বধূকে মাথা ন্যাড়া করে গ্রামে ঘোরানোর অভিযোগ উঠল তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে ওই বধূকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশ কর্মীদেরও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৪ ০২:১৭

স্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে এক বধূকে মাথা ন্যাড়া করে গ্রামে ঘোরানোর অভিযোগ উঠল তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে ওই বধূকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশ কর্মীদেরও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। মালদহের ইংরেজবাজার থানার ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নিয়ামতপুর এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরে পুলিশকে সাহায্য করার জন্য গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দাকে অভিযুক্তরা মারধর করে বলেও অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। উদ্ধার করার পর ওই বধূকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ জানায়, এিই গ্রামের এক যুবক সকালে শোওয়ার ঘরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেডে ভর্তি করানোর পর সকাল ১১টায় তাঁর মৃত্যু হয়। তার পরেই তার স্ত্রীকে মাথা ন্যাড়া করে গ্রামে ঘোরানো হয় বলে অভিযোগ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশকে হেনস্থা করার পৃথক একটি মামলাও রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজা হচ্ছে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইংরেজবাজারের মিল্কি এলাকার বাসিন্দা ওই বধূর পাঁচ মাস আগে বিয়ে হয়। তাঁর স্বামী ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। ঈদ উপলক্ষে কয়েকদিন আগে তিনি বাড়িতে আসেন। গত দুদিন ধরে ওই দম্পতির মধ্যে তুমুল গোলমাল চলছিল বলে অভিযোগ। এক যুবকের সঙ্গে বধূর সম্পর্ক রয়েছে, এই সন্দেহে দম্পতির মধ্যে মাঝেমধ্যেই বচসা হত বলে পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানায়, বুধবার রাতেও ওই দম্পতির মধ্যে গোলমাল হয়। সকালে তাঁর স্বামী শোওয়ার ঘরে স্ত্রীর সামনেই গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। ফাঁস দেওয়ার পর স্ত্রী নিচ থেকে স্বামীকে জাপটে ধরে চিত্‌কার শুরু করেন। এরপর পরিবারের লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে ওই যুবককে নিচে নামিয়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করান। সকাল ১১টায় তাঁর মৃত্যুর কথা গ্রামে চাউর হতেই চাঞ্চল্য চড়ায়। বধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাসিন্দাদের একাংশকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর মাথা ন্যাড়া করে দেন বলে অভিযোগ। মারধর করতে করতে তাঁকে গোটা গ্রাম ঘুরিয়ে একটি বাড়ির ঘরে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ।

খবর পেয়ে পুলিশ এলাকায় যেতেই বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশকে বাধা দেয়। পরে আইসি দিলীপ কর্মকার বিরাট পুলিশ বাহিনী নিয়ে গ্রামে পৌঁছান। এরপর বাসিন্দাদের একাংশের সাহায্যে ওই বধৃকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে পুলিশ। পুলিশ গ্রাম ছাড়তেই ফের গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশকে যারা সাহায্য করেছিলেন অভিযুক্তরা তাদের মারধর করেন বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানায়, মৃতের বাবা ছেলেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে বধৃর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। পাশাপাশি গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশও তাদের মারধর করা হয়েছে বলে পুলিশে অভিযোগ করেছেন। এছাড়া পুলিশকে হেনস্থা করায় পৃথকভাবে একটি মামলা করেছে পুলিশও। নির্যাতিতা বধূর মাথা ন্যাড়া করারও একটি মামলা পুলিশ চালু করেছে।

ওই বধূ বলেন, “আমাকে মিথ্যা সন্দেহ করা হত। তাই আজ বাপের বাড়ি চলে যেতে চেয়েছিলাম। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু তার আগেই যে সন্দেহের বশে স্বামী এমন করবে ভাবিনি। তার পরে গ্রামের লোকজন আমাকে চুল কেটে গ্রামে ঘুরিয়েছে।”

chanchal provocation suicide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy