উৎপাদনের আশায় যথেচ্ছ কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে মাটির উর্বরতা কমতে শুরু করেছে। কৃষি জমিতে বেড়ে চলা ছোট চা বাগানকে ঘিরে পরিবেশপ্রেমী মহলে ওই অভিযোগ সীমাবদ্ধ ছিল। রবিবার ক্ষুদ্র চা চাষিদের সম্মেলন মঞ্চ থেকেও এ অভিযোগ উঠল। আইটিপিএ হলে আয়োজিত জেলা ক্ষুদ্র চা চাষিদের অষ্টম বার্ষিক সম্মেলনে প্রকাশিত সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, যথেচ্ছ কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে মাটি দূষণ বেড়ে চলায় চাষিদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হচ্ছে। সেই সঙ্গে সমীক্ষার পরে ছোট বাগানের তালিকা প্রকাশ ও ছাড়পত্র প্রদানে গড়িমসির অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারের সমালোচনাও করেছেন সংগঠনের কর্তারা।
এদিনের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হলেও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব অনেক পরে সভা মঞ্চে উপস্থিত হন। চা চাষি সমিতির কর্তাদের কাছে এ কথা শুনে তিনি আলোচনায় বসার আবেদন জানান। মন্ত্রী বলেন, “ধানের জমিতে চা বাগান হবে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক ছিল, এখনও আছে। তবে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই ছোট চা বাগানের সঙ্গে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। এখানেও চাষিদের সমস্যা আছে। আলোচনায় বসুন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।” জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “মন্ত্রীকে সমস্যার কথা খুলে বলা হয়েছে। বিষয়টি ভাল ভাবে বোঝার জন্য তিনি আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। সংস্থার পক্ষ থেকে খুব তাড়াতাড়ি আলোচনায় বসে সমস্যাগুলি তুলে ধরা হবে।”
এ দিনের সম্মেলনে শুরু থেকে ছিল দূষণ নিয়ে আত্মসমালোচনার সুর। চা গবেষণা কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ মেনে চা চাষ করার উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশি পাতা উৎপাদনের অত্যধিক রাসায়নিক সার, কীটনাশক, অণুখাদ্য প্রয়োগে মাটি বন্ধ্যা হচ্ছে। জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির অভিযোগ, তাঁরা দূষণ এড়াতে সচেষ্ট হলেও রাজ্য সরকার তাঁদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসছে না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘চার বছর আগে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর সমীক্ষার করার পরেও রাজ্য সরকার ছোট বাগানের তালিকা প্রকাশ করেনি। শুধু তাই নয় ছাড়পত্র প্রদানের ক্ষেত্রে বামফ্রন্ট সরকারের মতো বর্তমান সরকারের উদাসীনতা স্পষ্ট। সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় চা পর্ষদের উপ অধিকর্তা চন্দ্রশেখর মিত্র। কাচা পাতার দাম বেঁধে দেওয়ার দাবি মেনে তিনি বলেন, “সব খতিয়ে দেখে পাতার ন্যূনতম দাম স্থির করা হবে।”