পাড়ার পুজো। চাঁদা না দিলে চলবে?
স্কুলে ঢুকে শিক্ষিকাদের প্রত্যেকের নামে হাজার টাকার রসিদ কেটে দিয়ে এসেছিলেন পুরনো মালদহের একটি পুজো কমিটির কর্তারা। ফিরে আসার আগে প্রচ্ছন্ন হুমকিও ছিল তাঁদের‘পাড়ার পুজোয় চাঁদা না দিলে চলবে?’
শহরের মঙ্গলবাড়ি এলাকার গৌরচন্দ্র ঘোষ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের অভিযোগ, পুজো কর্মকর্তাদের নির্দেশ ছিল, শুক্রবারের মধ্যে ক্লাবে গিয়ে যেন টাকা-টা পৌঁছে দেন তাঁরা। সেই আবদারে অবশ্য প্রশ্রয় দেননি শিক্ষিকারা। উল্টে, স্থানীয় থানায় গিয়ে পুজো কমিটির কর্তাদের নামে সরাসরি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে শনিবার তাই ওই স্কুল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন পুজো কমিটির কর্তারা। এ দিন স্কুলের পরে পুজোর ছুটি পড়ে যাওয়ার কথা ওই স্কুলে। সকালে শিক্ষিকারা স্কুলে এসে দেখেন তালা ঝুলছে গেটে। ছাত্রীরাও স্কুলে এসে ঢুকতে না পেরে স্কুল-গেটেই অপেক্ষা করতে থাকে। খবর যায় থানায়। অভিযোগ, পুলিশ আসতে পেরিয়ে যায় প্রায় দু’ঘণ্টা। ততক্ষণে অধিকাংশ ছাত্রীই ফিরে গিয়েছে। তবে পুলিশ আসতে দেখে পুজো কর্তারাই তড়িঘড়ি তালা খুলে চম্পট দেয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু অভিযোগ পেয়েও পুলিশ পুজো কর্তাদের গ্রেফতার করল না কেন?
ওই পুজো কমিটির মাথায় রয়েছেন তৃণমূলের পরিচিত কর্মী মিত্তুন ছেত্রী। মালদহ জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি অম্লান ভাদুরির অনুগামী মিত্তুনের এলাকায় যে যথেষ্ট প্রতিপত্তি রয়েছে তা স্থানীয় বাসিন্দারাই স্বীকার করেছেন। এখন প্রশ্ন উঠেছে, শাসক দলের নেতা জড়িত থাকার কারণেই কী অভিযোগ পেয়েও তৎপর হয়নি পুলিশ? জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “শিক্ষিকাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।” শিক্ষিকাদের একাংশের অভিযোগ, তা যে মুখের কথা তা তাঁরা জানেন।
ঘটনার পর থেকেই মিত্তুনের খোঁজ নেই। তবে, পুজোর মুখে এই ঘটনা যে শাসক দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন অম্লান। তিনি বলেন, “মিত্তুন ওই পুজোর সঙ্গে জড়িত ঠিকই, তবে ওই চাঁদার জুলুমের পিছনে সে ছিল কিনা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।” তবে তাঁর দল যে চাঁদার জুলুমবাজিকে প্রশ্রয় দেবে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছন তিনি।
মালদহ তৃণমূলে সাবিত্রী ও কৃষ্ণেন্দু গোষ্ঠী-লড়াই সুবিদিত। ঘটনাচক্রে অম্লান মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এ দিনের ঘটনায় তাঁরও যে মুখ পুড়ছে ঘনিষ্ঠদের কাছে তা কবুল করেছেন সাবিত্রী। তিনি বলেন, “আমাদের যুব সংগঠনের কেউ ওই পুজো কমিটির কর্মকর্তা হতেই পারেন। তবে তিনি যে ওই জুলুমবাজির সঙ্গে জড়িত তার প্রমাণ নেই। তবে এ ব্যাপারে পুলিশই শেষ কথা বলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy