ভোটের মুখে সরিয়ে দেওয়া হল অশোকনগর থানার ওসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়কেও। তিনি ২০১৫ সালের মার্চ মাসে অশোকনগর থানায় ওসি হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন। বছর চল্লিশের অরিন্দমবাবু জেলা পুলিশ মহলে দক্ষ অফিসার হিসাবেই পরিচিত।
এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অশোকনগর থানার ওসি হিসাবে তিনি এলাকায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে পেরেছিলেন অনেকটাই। বেশ কয়েক জন দাগি দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে অস্ত্রশস্ত্রও উদ্ধার করেছিলেন। বর্তমানে তিনি জেলা ডিআইবিতে যোগ দিলেন। গত পুরসভা ভোটের সময়ে তাঁর ভূমিকায় কোনও পক্ষই কোনও অভিযোগ তোলেনি।
অরিন্দমবাবু গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কিন্তু কেন নির্বাচন কমিশনের কোপে পড়লেন ওসি, উঠছে সেই প্রশ্ন?
প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সম্প্রতি জেলা সিপিএম নেতা সুভাষ মুখোপাধ্যায় ওসির নামে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়, তিনি দুষ্কৃতীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। এলাকা দখলের ব্যবস্থা করছেন। অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, অরিন্দমবাবুর সঙ্গে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সুসম্পর্ক থাকার মাসুল গুনতে হল তাঁকে। তা ছাড়া, পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরীররও কাছের অফিসার ছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, পুলিশ সুপারকেও একই দিনে সরানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে।
সিপিএমের অশোকনগরের প্রার্থী সত্যসেবী কর অবশ্য বলেন, ‘‘স্থানীয় ভাবে আমরা ওসির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করিনি।’’ বিদায়ী বিধায়ক তথা অশোকনগরের তৃণমূল প্রার্থী ধীমান রায় বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন যা খুশি করুক, আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’’ ওসি হিসাবে তিনি ভালই কাজ করছিলেন বলে ধীমানবাবুর মত। অন্য দিকে, হাড়োয়া থানায় দিন পনেরো আগে যোগ দিয়েও বদলি হয়েছেন ওসি অনিল সাউ। যা নিয়ে বিস্ময় আছে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের মধ্যে। এই নিয়ে গত দু’আড়াই মাসে হাড়োয়ায় বদলি হলেন চার জন ওসি। দিন কয়েক আগে রাজারহাট থানা এলাকা থেকে উদ্ধার হয় শাসনের কীর্তিপুর এলাকার সিপিএম নেতা নুর ইসলাম মিস্ত্রির দেহ। ওই ঘটনায় হাড়োয়া থানার ওসির নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানায় বিরোধীরা। তার আগে সিপিএমের তরফে ওসির বিরুদ্ধে শাসক দলের হয়ে পক্ষপাতমূলক আচরণেরও অভিযোগ আনা হয়েছিল।
যদিও জেলা প্রশাসনের একাংশের দাবি, ঘটনাটি ছিল রাজারহাটের। সে ক্ষেত্রে লাগোয়া এলাকার থানার ওসিকে কেন সরানো হবে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তা ছাড়া, বার বার ওসি বদলের ফলে আখেরে এলাকায় আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা দেখা দেবে কিনা, তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন সাধারণ মানুষ। গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ওসি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy