ডিজিটাল দুনিয়ায় সেনা নামাতে তৃণমূলে নতুন কর্মসূচি চালু করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মসূচির পোশাকি নাম ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’। তৃণমূলের দাবি, নয়া কর্মসূচি ঘোষণা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ৫০ হাজারেরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ডিজিটাল মাধ্যমে দলের উপস্থিতি আরও শক্তপোক্ত করতেই এই কর্মসূচির ঘোষণা করেছে তৃণমূল। ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’ নামে একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। যাঁরা নিজেদের নাম ‘যোদ্ধা’ হিসাবে নথিভুক্ত করবেন, তাঁদের নাম, ফোন নম্বর, জেলা এবং বিধানসভা কেন্দ্রের নাম সেখানে জানাতে হবে। তৃণমূল জানিয়েছে, ওয়েবসাইট চালু হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর দেখা গিয়েছে, ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিজের নাম নথিভুক্ত করেছেন সেখানে। যাকে ‘বিরাট সাড়া’ বলেই মনে করছে শাসকদল।
প্রসঙ্গত, কর্মসূচির সূচনায় তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়োবার্তাও দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘নানা মাধ্যমে লড়াই চলছে। রাজপথ, সংসদের মতো সমাজমাধ্যম এবং ডিজিটাল দুনিয়াও এখন লড়াইয়ের জায়গা হয়ে উঠেছে। যা রয়েছে মোবাইলের স্ক্রিনে। যেখানে প্রতিনিয়ত বাংলা-বিরোধীরা কুৎসা, অপপ্রচার করছে।’’ যাঁরা এই যোদ্ধা হবেন, তাঁদের এক এক জনকে ‘সেনা’ (আর্মি) বলে অভিহিত করেছিলেন অভিষেক।
তৃণমূল সূত্রের খবর, বুথ পিছু অন্তত ১০ জনকে ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাঁরা মোবাইলে স্বচ্ছন্দ, প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণা রয়েছে, রাজনৈতিক যুক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন, তেমন তরুণ-তরুণীদেরই ‘যোদ্ধা’ করতে চাইছে ক্যামাক স্ট্রিট। যদিও প্রচারের সময় সকলকেই আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে অভিষেক যে নবীন এবং তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে কাজ করতেই বেশি স্বচ্ছন্দ, সে ইঙ্গিত তাঁর কথায় আগেও বহু বার মিলেছে। ভিডিয়ো তৈরি করা, গ্রাফিকে পারদর্শী এমন ‘যোগ্যতা’য় ‘যোদ্ধা’ হওয়া যাবে তৃণমূলের।
ঘটনাচক্রে, অভিষেক ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’ কর্মসূচির সূচনা করার দিনেই, অর্থাৎ বৃহস্পতিবারে বিজেপির ডিজিটাল তথা সমাজমাধ্যম বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সারলেন অমিত মালবীয়। বিজেপির রাজ্য দফতরেই বৈঠক হয়েছিল। সারা রাজ্য থেকে প্রথম সারির প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছিল। দলের সমাজমাধ্যম বিভাগের সর্বভারতীয় প্রধান হিসাবে মালবীয় নিজে বৈঠকে ছিলেন। আরও কয়েক জন সর্বভারতীয় স্তরের প্রতিনিধি ছিলেন। আর ছিলেন ভাষ্য নির্মাণ টিমের কয়েক জন।
সমাজমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে আগামী কয়েক মাসে বিজেপির নানা রাজনৈতিক ভাষ্যকে প্রতিষ্ঠা দেওয়া কতটা জরুরি এবং কোন কৌশলে তা করতে হবে, তা নিয়েই মূলত কথা হয়েছে। দীপাবলি কাটলেই রাজ্যে বিজেপির সকল সমাজমাধ্যম সৈনিককে ডেকে কর্মশালার আয়োজন হতে চলেছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর।