ভারত-পাকিস্তান কথা উঠলে অনেক সময়েই তাঁদের শুনতে হয়েছে, ‘‘যুদ্ধে কোন দিকে?’’ কাশ্মীরে জঙ্গিদের গুলিতে সেই বাড়ির ছেলে ঝন্টু আলি শেখের মৃত্যুতে কাঁদতে কাঁদতে বাবার জবাব, ‘‘এ বার প্রমাণ হল তো!’’
পহেলগাঁও-কাণ্ড নিয়ে শোরগোলের আবহে জম্মু-কাশ্মীরের উধমপুরে জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে সেনা জওয়ান ঝন্টুর। ৬ প্যারা এসএফ-এ কর্মরত ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝন্টুর মৃত্যুর খবর পৌঁছোতেই কান্নার রোল নদিয়ার তেহট্টের বাড়িতে। ছেলের ছবি বুকে আঁকড়ে ধরে মা আকালি বিবি এবং বাবা সাবুর আলি দু’জনেই বলছিলেন, ‘‘ছেলে মরে প্রমাণ করল, আমরা কোন দিকে!’’
তেহট্টের পাথরঘাটা গ্রামে থাকেন সাবুর-আকালিরা। তাঁদের বাড়ি থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত মেরেকেটে চার কিলোমিটার দূরে। সীমান্তে বন্দুক কাঁধে জওয়ানের পায়চারি দেখেই বড় হয়ে ওঠা ঝন্টুর। সাবুর জানান, তখন থেকেই জওয়ান হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন ছোট ছেলে। আন্দুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ঝন্টু ভর্তি হয়েছিলেন বেতাইয়ের বিআর অম্বেডকর কলেজে। সেখানে স্নাতক শেষ করার পরেই ভারতীয় সেনায় যোগদান। তবে শুধু ঝন্টু একাই নন, তাঁর দাদা এবং বৌদিও ভারতীয় সেনায় রয়েছেন। সেই বৌদি অনিন্দিতা শেখও কাশ্মীরে কর্মরত। বৃহস্পতিবার তিনিই বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছিলেন, ‘‘ছোট ভাই আর নেই!’’
ঝন্টুও বিবাহিত। স্ত্রী ঝুমা এবং তাঁদের দুই সন্তান তনভির এবং রেহানা থাকেন আগ্রার সেনা ক্যান্টনমেন্টে। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে সেখান থেকে তাঁরা দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পরিবার।