পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেল হেফাজত কি দীর্ঘায়িত হবে?
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) চাইলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আগামী সাড়ে তিন বছর জেল হেফাজতেই রাখা যেতে পারে। এমনটাই দাবি করলেন ইডির দুই আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি এবং ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। এসএসসি নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় বুধবার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থকে আরও ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ফলে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি জেল হেফাজতেই থাকবেন। পার্থ যদিও তাঁকে জামিন দিয়ে গৃহবন্দি রাখার আর্জি জানিয়েছেন আদালতের কাছে। বুধবার পার্থ তাঁর আইনজীবীদের মাধ্যমে এ-ও জানিয়েছেন, তিনি যে কোনও মূল্যে জামিন পেতে চাইছেন। কিন্তু ইডির আইনজীবীদের বক্তব্য, প্রাক্তন মন্ত্রীর মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে যে তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, তাতে ১৪ দিন কেন আগামী সাড়ে তিন বছর তাঁকে জেল হেফাজতেই রেখে দিতে পারে ইডি।
বুধবার পার্থের তরফে তাঁর আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করতেই তার বিরোধিতা করে ইডি। একে একে আদালতে তথ্যপ্রমাণ জমা দিতে থাকে তারা। কেন পার্থকে জামিন দেওয়া যাবে না, তার পক্ষে যুক্তি দেন ইডির আইনজীবীরা। তাঁরা বলেন, এই মামলায় ২৫টি নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। মোট ১০০টি সন্দেহজনক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকি, ‘সিমবায়োসিস’ নামে একটি সংস্থার নাম করে তাঁরা এ-ও জানান যে, ওই সংস্থার নামে বাজারে শেয়ার ছেড়ে কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে সেই শেয়ার। ইডির আতসকাচের তলায় বেশ কিছু ভুয়ো সংস্থা রয়েছে। সে সব সংস্থার নামে সম্পত্তি কেনা হয়েছে। এর মধ্যে একটি সূত্রে এ-ও জানা যায় যে একটি সংস্থার ডিরেক্টর হিসেবে নাম রয়েছে পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের। সেই সংস্থার অধিকাংশ শেয়ারও অর্পিতার নামে। ইডির একের পর এক তথ্যের জবাবে পার্থের আইনজীবীরা একটাই কথা জানিয়েছেন, তাঁদের মক্কেলের নামে কিছুই পাওয়া যায়নি। কিছু পাওয়া যায়নি তাঁর বাড়ি থেকেও। কিন্তু ইডির দেওয়া তথ্য এবং যুক্তির সামনে সেই আবেদন ধোপে টেকেনি।
আদালতে পার্থের আইনজীবী জানিয়েছেন, পার্থ এখন কোনও পদে নেই। তাই তিনি প্রভাবশালী নন। তাঁর শারীরিক অসুস্থতার জন্যই তাঁকে জামিন দেওয়া দরকার। চিকিৎসাও হওয়া দরকার। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর, পুজোর ঠিক ১৭ দিন আগে এই দফার জেল হেফাজতের মেয়াদ ফুরোলে তাঁরা আবারও এই একই যুক্তিতে জামিন চাইবেন পার্থের। কিন্তু ইডি আইনজীবীরা যে ভাবে একে একে যুক্তি এবং পাল্টা যুক্তি সাজাচ্ছেন তাতে বিচার প্রক্রিয়া প্রলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy