মঙ্গলবার ফিরেছেন নাকতলার বাড়িতে। বাড়ি ফেরার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের এনুমারেশন ফর্ম পেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ জানালেন, বুধবার তিনি ওই ফর্ম পূরণও করে ফেলেছেন।
নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত পার্থ তিন বছর তিন মাস জেলে থাকার পরে জামিনে বাড়ি ফিরেছেন। তিনি জেলে থাকাকালীনই ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর কাজ শুরু হয়ে যায়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম বিলিও শুরু হয়ে যায়। ফর্ম বিলি শুরু হয় তৃণমূলের একদা মহাসচিব (বর্তমানে দল থেকে নিলম্বিত) পার্থের নাকতলা এলাকাতেও।
মঙ্গলবার পর্যন্ত ওই এলাকায় ৭৫০ জনকে ফর্ম দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। ওই এলাকার কমিশনের এসআইআর-এর দায়িত্বে থাকা বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও) আনন্দবাজার ডট কম-কে মঙ্গলবার জানান, ভোটার তালিকার ক্রমিং সংখ্যা অনুসারে ফর্ম বিলি হচ্ছে। পার্থের যে ক্রমিক সংখ্যা রয়েছে, তাতে তাঁর বাড়ি যেতে যেতে শুক্রবার হয়ে যাবে। তবে দেখা গেল, শুক্রবার নয়, তার আগেই কমিশনের দেওয়া এনুমারেশন ফর্ম পেয়ে গেলেন তিনি।
দল থেকে নিলম্বিত হলেও, পার্থ এখনও বিধায়ক। কমিশন সূত্রে খবর, ‘ওজনদার ব্যক্তি’রা যদি পরে ফর্ম পান, সে ক্ষেত্রে ভুল বার্তা যেতে পারে। তা ছাড়া যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিএলওদের ফর্ম বিলি করতে বলা হয়েছে। সেই মতো বুধবার পার্থের বাড়িতে বিএলও-কে যেতে বলা হয় কমিশনের তরফেই। কমিশন সূত্রে খবর, আনন্দবাজার ডট কম-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনটি তাদের নজরে আসে। তার পরেই ওই এলাকার বিএলও-কে ফোন করা হয়।
আরও পড়ুন:
কমিশনের ওই সূত্র জানাচ্ছে, নির্দেশ মতো বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ পার্থের বাড়িতে গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম দিয়ে আসেন বিএলও। পার্থ নিজেই সই করে সেই ফর্ম সংগ্রহ করেছেন। কমিশনের নির্দেশ মতো, বেহালা পশ্চিমের বিধায়ককে ফর্ম বিলির সময়ে ছবিও তোলেন বিএলও। দু’দিন পর আবার তিনি পার্থের বাড়িতে যাবেন পূরণ হওয়া ফর্মটি নিয়ে আসার জন্য। আনন্দবাজার ডট কম-কে বিএলও জানান, ফর্ম দিতে যাওয়ার সময়ে পার্থের সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথাবার্তাও হয়েছে তাঁর। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী বিএলও-র জানতে চান, তিনি কী করেন। বিএলও জানান, তিনি শিক্ষিকা। বিএলও স্কুলে চাকরি করেন শুনে পার্থ তাঁকে বলেন, ‘খুব ভাল। জানেন তো আমি তো শিক্ষামন্ত্রী ছিলাম।’
অন্য দিকে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীও বলেন, “আজ আমি এসআইআর ফর্ম পূরণ করেছি। আমার দলের লোকেরাই এসে আমার কাছে এসে করিয়ে নিয়ে গিয়েছে। আমার নেত্রী তো এসআইআর করতে বারণ করেননি।” বস্তুত, এনুমারেশন ফর্ম বিলির সময়ে বিএলও-দের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বুথ স্তরের এজেন্ট (বিএলএ)-রাও থাকেন। তাঁরাও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যান। এ ক্ষেত্রে ‘দলের লোকেরা’ বলতে পার্থ তাঁদের কথাই বোঝাতে চেয়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।