Advertisement
E-Paper

এত ফেল কেন! সক্রিয় শিক্ষামন্ত্রী

বৃহস্পতিবার বিএ ও বিএসসি-র পার্ট-১ পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। বিএ-তে অর্ধেকেরও বেশি পরীক্ষার্থী পাশ করতে পারেননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৯

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের কলা (বিএ) পার্ট-১ পরীক্ষার ফল নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তলব করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এবং রেজিস্ট্রারকে। তার পরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হল, প্রয়োজনে ছাত্র স্বার্থে নিয়ম বদলও করা হতে পারে।

বৃহস্পতিবার বিএ ও বিএসসি-র পার্ট-১ পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। বিএ-তে অর্ধেকেরও বেশি পরীক্ষার্থী পাশ করতে পারেননি। বিএ-তে পাশের হার ২০১৬-র ৭৫ শতাংশ থেকে নেমে হয়েছে ৪২.৫০ শতাংশ এবং বিএসসি-তে ২০১৬-র ৮৫ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৭১ শতাংশ। এ বার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৪০ হাজার।

বিএসসি পার্ট-১ পরীক্ষায় পাশ করতে না পেরে ওই দিন ফল প্রকাশের পরে নিউ আলিপুর কলেজের এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেন বলে তাঁর পরিবারের অভিযোগ।

পুরনো নিয়মে, অনার্সের কোনও পরীক্ষার্থী জেনারেলের দু’টি বিষয়ের একটিতেও পাশ না করলেও তাঁকে পরের ক্লাসে তুলে দেওয়া হতো। পরে সাপ্লিমেন্টারি দিতে হতো। জেনারেলের পরীক্ষার্থী তিনটির মধ্যে একটি বিষয়ে পাশ করলেই তাঁকে যোগ্য হিসেবে ধরে নেওয়া হতো। তবে পরে সাপ্লিমেন্টারি দিয়ে পাশ করতে হতো। ২০১৬ সালে নিয়ম বদলের পরে এখন অনার্সের পড়ুয়াকে জেনারেলে দু’টো বিষয়ের যে কোনও একটিতে পাশ করতেই হবে। অন্যটি পরে সাপ্লিমেন্টারি দিয়ে পাশ করতে হবে। আর জেনারেলের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ের মধ্যে দু’টি বিষয়ে পাশ করা বাধ্যতামূলক। এই নতুন শর্ত যাঁরা পূরণ করেননি, তাঁদেরই আটকে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার শিক্ষামন্ত্রী জানান, এই যে নিয়ম পরিবর্তন হয়েছে, তা শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তাঁর জানার কথা নয়। তেমনই উচ্চশিক্ষা দফতরও এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল নয় বলে তিনি জানান। পরীক্ষার শোচনীয় ফলের কথা জেনে তিনি বিকাশ ভবনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠিয়েছেন। সূত্রের খবর, সম্ভবত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যাবেন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে। এ দিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রারদের বলেছি, এই ব্যাপক অসাফল্যের কারণ কী, তা আমরা একটু জানতে চাই।’’ পার্থবাবু জানান, নতুন নিয়ম কতটা যুক্তিযুক্ত, তা তিনি জানেন না। এটা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে কিনা, সেটাও তাঁর জানা নেই। পুরো বিষয়টি তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান।

ফল প্রকাশের পরেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলির পঠনপাঠনের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে শিক্ষা মহলে। হাজিরার কড়াকড়ি নেই বলে অধিকাংশ কলেজেই পড়ুয়াদের ক্লাসে যেতেও অনাগ্রহ রয়েছে বলে অভিযোগ। পড়ুয়াদের যে নিয়মিত ক্লাস করা প্রয়োজন, এ দিন শিক্ষামন্ত্রীও সে কথা মনে করিয়ে দেন। এ দিন সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) দীপক কর বলেন, ‘‘এক বছরেই পড়াশোনার মান খারাপ হয়ে গিয়েছে, এ রকম নয়। প্রয়োজনে ছাত্রদের স্বার্থে নিয়ম পরিবর্তন করা হতে পারে।’’ শিক্ষামহলের একাংশের বক্তব্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্বশাসিত। সেখানকার পরীক্ষা সংক্রান্ত নিয়ম বদলের বিষয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরকে জানাতে হবে, সেটা দস্তুর নয়। তবে শিক্ষামন্ত্রী বারবারই বলেন, জনগণের টাকায় বিশ্ববিদ্যালয় চলে। সেই টাকা যথাযথ ব্যবাহার হচ্ছে কিনা, তা সরকার অবশ্যই দেখবে। তবে পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ থাকবে না। শোচনীয় ফলের পরে কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠিয়ে পঠনপাঠন নিয়েও সরকার হস্তক্ষেপ করল বলে ধারণা শিক্ষামহলের।

Calcutta University Results Fail Partha Chatterjee Education Minister পার্থ চট্টোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy