Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
North 24 Parganas

আবার দুশ্চিন্তায় উত্তর ২৪ পরগনা

মাস দেড়েক আগে গ্রামের মাঠ থেকে উদ্ধার হয়েছিল কয়েকটা লিফলেট। তাতে বাংলায় লেখা, ‘জেহাদের পথে, বাংলা থেকে বাগদাদ।’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুপ্রকাশ মণ্ডল 
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:০২
Share: Save:

মাস দেড়েক আগে গ্রামের মাঠ থেকে উদ্ধার হয়েছিল কয়েকটা লিফলেট। তাতে বাংলায় লেখা, ‘জেহাদের পথে, বাংলা থেকে বাগদাদ।’

উত্তর ২৪ পরগনার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী স্বরূপনগরের গাবর্ডা এলাকায় ওই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেন পুলিশ, গোয়েন্দারা। গ্রামবাসীরা জানান, রাতের অন্ধকারে কিছু লোক এসেছিল কাঁটাতারহীন সীমান্তের এ পারে। মাঠে বসে কথা বলে এ পারের কয়েক জন ছায়ামূর্তির সঙ্গে। দু’পক্ষের মধ্যে কিছু জিনিস হাতবদল হতেও দেখেন কয়েক জন। তার পরে এলাকায় নজরদারি বেড়েছে। তবে উত্তর ২৪ পরগনার ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় জঙ্গি অনুপ্রবেশের ঘটনা নতুন নয়। মুর্শিদাবাদে আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে ৬ জন গ্রেফতার হওয়ার পরে নতুন করে উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্তবর্তী এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।

সম্প্রতি বাদুড়িয়া থেকে তানিয়া পারভিন নামে এক কলেজ ছাত্রীকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। গোয়েন্দাদের দাবি, তানিয়া রাজ্যে গ্রেফতার হওয়া প্রথম লস্কর-ই-তইবা জঙ্গি। পঞ্চাশটিরও বেশি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালাত সে। মূল কাজ ছিল অল্পবয়সীদের মগজ ধোলাই। সংগঠনের সদস্য সংগ্রহের দায়িত্বও তার উপরে ছিল বলে জানতে পারেন গোয়েন্দারা। মাসখানেক আগে বসিরহাটের দন্ডিরহাট থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করে গুজরাত পুলিশের এসটিএফ। অভিযোগ, সে রাজ্যে একটি বিস্ফোরণে জড়িত জঙ্গিদের সে আশ্রয় দিয়েছিল নিজের বাড়িতে। হুন্ডির মাধ্যমে জঙ্গিদের অর্থ সাহায্য করত বলেও অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।

২০০৭ সালের এপ্রিলে বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশের পেট্রাপোলে ঢুকে পড়েছিল পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার শেখ সামির-সহ চার লস্কর জঙ্গি। বিএসএফ তাদের পাকড়াও করে। বনগাঁ থানার পুলিশ গ্রেফতার করে। মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। সামির ছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছিল মহম্মদ ইউনুস, শেখ আবদুল্লা ও মুজাফফর আহমেদ রাঠৌড় নামে এক যুবককে। আবদুল্লা ও ইউনুসের বাড়ি পাকিস্তানে। রাঠৌড় থাকত কাশ্মীরে। কাশ্মীরে সেনা ছাউনিতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল ওই জঙ্গিদের। কলকাতায় সামিরের ডেরা থেকে প্রচুর নাইট্রো গ্লিসারিন উদ্ধার হয়, যা বিস্ফোরক তৈরির কাজে লাগে। বনগাঁ আদালত সামিরের ফাঁসির নির্দেশ দেয়।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ‘জামাত-উল মুজাহিদিন বাংলাদেশ’ (জেএমবি) জঙ্গি সংগঠন সে দেশে নিষিদ্ধ হওয়ার পরে মুশকিলে পড়েছে সংগঠনের সদস্যেরা। এক দিকে অর্থসংঙ্কট, অন্য দিকে সদস্য সংগ্রহ— সব দিক দিয়েই মুশকিলে পড়েছে তারা। সে জন্য আপাতত চোরাচালানের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পথ নিয়েছে। একই সঙ্গে সীমান্তবর্তী এলাকায় অল্পবয়সীদের নিশানা করে তাদের জেহাদের পাঠ পড়াচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে উসকানিমূলক বার্তা ছড়ানোর কাজ চলছে। (তথ্য সহায়তা: সীমান্ত মৈত্র ও নির্মল বসু)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

North 24 Parganas Al-Qaeda NIA Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE