E-Paper

বোঝাই যাচ্ছে না রিপোর্ট! কেন্দ্রীয় দলের সুপারিশে ‘অভিযুক্তদের’ খুঁজতে কেন্দ্রেরই দ্বারস্থ রাজ্য

প্রশাসনের বক্তব্য, দশটির মধ্যে সাতটি জেলায় গরমিল পাওয়ার তথ্য রাজ্যকে জানিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু সেই গরমিলগুলি কোন এলাকায় এবং কারা দায়ী, তার কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৩ ০৬:২৪
picture of house under PMAY scheme.

সবিস্তার রিপোর্ট চেয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য। প্রতীকী ছবি।

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে হওয়া কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টের ভিত্তিতে ‘অভিযুক্তদের’ বিরুদ্ধে রাজ্যকে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। কিন্তু অভিযোগগুলি কাদের বিরুদ্ধে, কোন এলাকায় উঠেছে এবং কাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে হবে, তা বুঝতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় সবিস্তার রিপোর্ট চেয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য।

পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “কেন্দ্রের পাঠানো রিপোর্ট বোঝা যাচ্ছে না। তা-ও আমরা সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখছি। তার পরে তা কেন্দ্রকে জানানো হবে।”

প্রশাসনের বক্তব্য, দশটির মধ্যে সাতটি জেলায় গরমিল পাওয়ার তথ্য রাজ্যকে জানিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু সেই গরমিলগুলি কোন এলাকায় এবং কারা দায়ী, তার কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। যেমন, মুর্শিদাবাদে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের কমিটির সমীক্ষায় ৫৩১ জন উপভোক্তার তালিকা পাওয়া গিয়েছে। তাতে ২৫ জন উপভোক্তা হওয়ার যোগ্য। কিন্তু অযোগ্যরা কারা, কোন এলাকার এবং কাদের কারণে ত্রুটি হল, তার কোনও তথ্য রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়নি।

পঞ্চায়েত দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, উপভোক্তাদের যাচাই-প্রক্রিয়া যথাযথ ভাবে করা হয়নি এবং পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। সেই কেন্দ্রীয় রিপোর্টই আবার বলছে, যাচাই দলের তরফে ঘুষ চাওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। অথচ বলা হয়েছে, যাচাই দলের সদস্যেরা নিজের কাজের প্রতি সুবিচার করেননি এবং অযোগ্যদের নাম তালিকাভুক্ত করার ব্যাপারে সমঝোতা করেছেন। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তার কথায়, “এটা তো পরস্পরবিরোধী মন্তব্য। ঘুষ নেওয়ার প্রমাণ যদি না থাকে, তা হলে কার বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ করা হবে, তা তো স্পষ্ট হচ্ছে না।”

রাজ্যের অভিযোগ, উক্ত জেলাগুলি ছাড়াও পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, কালিম্পং, দার্জিলিং এবং নদিয়ায় প্রায় একই ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে এবং সেগুলিতেও সুনির্দিষ্ট তথ্যের কোনও উল্লেখ নেই।

রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, “যে বিষয়ের উপর রিপোর্ট হয়েছে, সেই তথ্য কেন্দ্রের কাছে থাকবে। অভিযোগের সঠিক জবাব কেন্দ্র দিতে পারবে। রাজ্যের শাসক দলের সীমাহীন দুর্নীতি প্রান্তিক মানুষকে অসহায়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”

প্রশাসনিক সূত্রের পাল্টা দাবি, কেন্দ্র বলার অনেক আগে থেকে উপভোক্তা তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু করেছিল রাজ্য। আগে উপভোক্তা তালিকায় নাম ছিল প্রায় ৫৪ লক্ষ। ২০২১ সালের শেষ থেকেই তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হয় রাজ্যে। সর্বশেষ সেই তালিকা থেকে প্রায় ১৭ লক্ষ অযোগ্য নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কেন্দ্র যে সময়সীমা দিয়েছিল, তাতে দৈনিক প্রায় পাঁচ লক্ষ করে যাচাই করতে হয়েছে রাজ্যে। সেই হিসাবে ২৩ জেলাকে দিনে প্রায় ২২ হাজার করে উপভোক্তার যাচাই করে অযোগ্যদের বাদ দিতে হয়েছে। বিষয়টি খুব কঠিন হলেও তা শেষ করেছে রাজ্য। সেই তুলনায় কেন্দ্রীয় দলে রিপোর্টে উল্লেখ থাকা খুঁতগুলি নেহাই দুর্বল। পঞ্চায়েতমন্ত্রীর অভিযোগ, “আগেও বলেছিলাম, আবারও বলছি, গরিবদের বঞ্চিত করতে ছুতো খোঁজারচেষ্টা চলছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pradhan Mantri Aawas Yojna West Bengal Central Government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy