Advertisement
০৬ মে ২০২৪
নদিয়া

পুলিশ দম্পতি খুনে জালে ৪

এক বছর ধরে ফেরার ছিল তারা। নাম ভাঁড়িয়ে থাকছিল বাংলাদেশে। কিন্ত ফের দেশে ঢোকাই কাল হল তাদের। নদিয়ার এক পুলিশ কনস্টেবল এবং তাঁর স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে বুধবার চার জনকে গ্রেফতার করল রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ।

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৬ ০৪:০৯
Share: Save:

এক বছর ধরে ফেরার ছিল তারা। নাম ভাঁড়িয়ে থাকছিল বাংলাদেশে। কিন্ত ফের দেশে ঢোকাই কাল হল তাদের। নদিয়ার এক পুলিশ কনস্টেবল এবং তাঁর স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে বুধবার চার জনকে গ্রেফতার করল রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে কৃষ্ণনগর থেকে ধরা হয় সৎপাল ঘোষ নামের এক ব্যক্তিকে। তাকে জেরা করে বুধবার রাতেই কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও তিন জনকে। তাদের নাম, সুব্রত সাহা, দেবাশিস সাহা এবং পরিতোষ সাহা। আজ, বৃহস্পতিবার ধৃতদের কৃষ্ণনগর আদালতে তোলার কথা।

সিআইডি সূত্রের খবর, গত বছর ২৪ জুন কৃষ্ণনগরের পালপাড়ায় নিজের বাড়িতে জেলা পুলিশের কনস্টেবল রমাপ্রসাদ চন্দ ও তাঁর স্ত্রী জয়ন্তী চন্দ খুন হন। তাঁদের কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা। জেলা পুলিশ প্রথমে তদন্ত শুরু করলেও পরে তার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় সিআইডি-র হাতে। খুনের তদন্তের জন্য সিআইডির ডিএসপি পিনাকীরঞ্জন দাসের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করা হয়।

সিআইডি জানিয়েছে, খুনের পরেই বাংলাদেশে গা-ঢাকা দিয়েছিল সৎপাল। কিন্তু গত বছরের শেষের দিকে একটি চুরির মামলায় বাংলাদেশ পুলিশের হাতে সে ধরা পড়ে যায়। তখনও কেউ জানত না সে খুনে জড়িত। সিআইডি-র এক অফিসার জানান, সৎপালের খবর পেতে পেতে সে বাংলাদেশ পুলিশের হাত থেকেও জামিন পেয়ে যায়। কিন্তু সে ফের সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢোকার পরে ‘সোর্স’ মারফত খবর পেয়ে তাকে ধরে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, নদিয়ার পুলিশের ‘স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ’(এসওজি)-এর ওই কনস্টেবল সুদের ব্যবসা করতেন। বাজারে তাঁর কয়েক কোটি টাকা খাটছিল। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ওই দম্পতির নামে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ‘ফিক্সড ডিপোজিট’-এর নথি পান গোয়েন্দারা। মেলে বহু ‘পোস্ট ডেটেড চেক’, সুদে টাকা ধার দেওয়া সংক্রান্ত বহু স্ট্যাম্প পেপার, কিছু ‘ব্ল্যাঙ্ক চেক’ এবং কিছু ব্যাঙ্কের পাশবই। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় নগদ কয়েক লক্ষ টাকা। গোয়েন্দাদের দাবি, টাকা নেওয়া বা লুঠপাটের মতলবে ওই খুন নয়। কুড়ি বছর ধরে চলা এই সুদের ব্যবসার কারণেই ওই পুলিশ সস্ত্রীক খুন হন। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, জমি-বাড়ি বন্ধক রেখে ওই পুলিশকর্মী টাকা ধার দিতেন সুদে। সুদ-সহ সেই টাকা সময়
মতো ফেরত দিতে না পারলে চলত মানসিক অত্যাচার।

তদন্তকারীরা জানান, খুনের ঘটনার দিন কয়েক আগে পরিচিত এক ব্যক্তিকে সুদে টাকা ধার দেন রমাপ্রসাদ। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরেও সে টাকা ফেরত দিতে পারেনি। সেই লোকটিই রমাপ্রসাদকে খুনের পরিকল্পনা করে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এখন তাকেও খুঁজছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

murder police arrested
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE