Advertisement
E-Paper

আজ টেস্ট, কাল ফাইনাল, বাজির দাপট রোখার পরীক্ষায় পুলিশ

প্রতি বছরই কালীপুজো এবং দেওয়ালির রাতে নিষিদ্ধ বাজির সঙ্গে লুকোচুরি চলে পুলিশের। কিন্তু এ বার বাজি নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এবং সেই নির্দেশ পালনের মূল দায়িত্ব বর্তেছে থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের উপরে। পরিবেশকর্মীরাও বলছেন, দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে আদালত অবমাননার দায়ে পড়বে পুলিশই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৪
পুলিশ কি পারবে শব্দ দানবের দাপট রুখতে?

পুলিশ কি পারবে শব্দ দানবের দাপট রুখতে?

সোমবার সন্ধ্যায় নিজের ঘরে চুপ করে বসে ছিলেন কলকাতার একটি থানার দাপুটে ওসি। বলছিলেন, ‘‘রাত পেরোলেই তো পরীক্ষা শুরু।’’ কারণ, বাজি ফাটানোর নিরিখে ‘দাগি’ বলে কুখ্যাত তাঁর থানার এলাকা।

প্রতি বছরই কালীপুজো এবং দেওয়ালির রাতে নিষিদ্ধ বাজির সঙ্গে লুকোচুরি চলে পুলিশের। কিন্তু এ বার বাজি নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এবং সেই নির্দেশ পালনের মূল দায়িত্ব বর্তেছে থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের উপরে। পরিবেশকর্মীরাও বলছেন, দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে আদালত অবমাননার দায়ে পড়বে পুলিশই।

তাই বাজির দাপট রোখাকে এ বার পরীক্ষা বলেই মনে করছেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। সেই পরীক্ষা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অনেকে। লালবাজারের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘কালীপুজোর রাতে টেস্ট, দেওয়ালিতে ফাইনাল।’’ এ বার বাজি পোড়ানোর সময় রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে বেঁধে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। রাত ৮টার আগে বা ১০টার পরে যাতে কোনও রকমের বাজি না-ফাটে, সেটাও পুলিশকে দেখতে হবে। এর উপরি হিসেবে রয়েছে ‘ডি জে বক্স’-এর দাপট।

পরীক্ষায় কঠিন প্রশ্ন আসার ইঙ্গিত মিলেছে সোমবারই। সন্ধ্যার পরে কলকাতা এবং শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় মাঝে-মধ্যেই বাজি ফেটেছে শব্দ ছড়িয়ে। উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার এবং দক্ষিণবঙ্গের হুগলি জেলার তারকেশ্বর, ধনেখালি, হরিপাল, সিঙ্গুরে বাজি ফেটেছে। প্রকাশ্যে শব্দবাজি বিক্রি হয়েছে শ্রীরামপুর, উত্তরপা়ড়া, বৈদ্যবাটী, বেগমপুর, বাঁশবেড়িয়ায়।

পরিবেশকর্মীদের একাংশের দাবি, কালীপুজোর রাতে নজরদারি বাড়বে, এই আঁচ করে আগের রাতেই শব্দবাজি ফাটিয়ে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের একাংশের গাফিলতিতেই শব্দবাজি বিক্রি হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। পরিবেশকর্মীদের যৌথ সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’ জানায়, কালীপুজো ও দেও়য়ালিতে কন্ট্রোল রুম খুলে নজরদারি চালাবে তারা। পুলিশ-প্রশাসন তৎপর না-হলে নালিশ জানানো হবে সুপ্রিম কোর্টে।

আরও পড়ুন: শব্দদানবের তাণ্ডবে বিপন্ন ব্যঞ্জনধ্বনি

পুলিশের দাবি, নিষিদ্ধ বাজি রুখতে কলকাতা ও বিভিন্ন জেলায় অভিযান হয়েছে। কলকাতাতেই প্রায় সাড়ে সাত হাজার কিলোগ্রাম বাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ধরপাকড় হয়েছে জেলাগুলিতেও। পুলিশের এ-ও বক্তব্য, শহরে সোমবার রাত পর্যন্ত বাজি ফাটানো নিয়ে বড় মাপের কোনও অভিযোগ আসেনি। বালিগঞ্জে রবিবার চকলেট বোমা নিয়ে একটি অভিযোগ মিলেছিল। বাজির বিষয়ে সচেতন করতে এ দিন স্কুলপড়ুয়াদের নিয়ে মিছিল করেছে বৌবাজার ও গড়িয়াহাট থানা। বাজির শব্দে পোষ্যদের দুর্গতি নিয়ে সচেতন করতে বাঁশদ্রোণী থানাও মিছিল করেছে।

ক’দিন আগেই কালীপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে নাগরিকদের ‘নিয়ম মেনে বাজি ফাটাতে’ বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রাতে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার টুইটারে নাগরিকদের দায়িত্বের সঙ্গে, নিয়ম মেনে কালীপুজো এবং দেওয়ালি পালন করতে বলেছেন। হাসপাতালের রোগীদের, পোষ্যদের এবং পরিবেশের ক্ষতি না-করে উৎসব উদ্‌যাপনের বার্তা-সহ একাধিক সচিত্র আবেদন টুইট করেছেন তিনি। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্রের আর্জি, ‘‘আলোর উৎসবকে দূষণের উৎসবে পরিণত করবেন না।’’

এ সবের পরেও প্রশ্ন থাকছে, আজ, ‘টেস্ট’ পরীক্ষায় উতরোবে কি পুলিশ-প্রশাসন?

অভিযোগ জানাতে

• ‘১০০’ ডায়াল

• রাজ্য পুলিশ কন্ট্রোল: ২২১৪-৫৪৮৬

• লালবাজার কন্ট্রোল: ২২১৪-৩২৩০/৩০২৪

• রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ: ২৩৩৫-৮২১২/৩৯১৩

• সবুজ মঞ্চ: ৯৮৩১৩১৮২৬৫/৯৮৩০৮২৮৫৬০

Obstacle Police Firecracker Sound Cracker Supreme Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy