Advertisement
E-Paper

যৌন নির্যাতনের অভিযোগ, সল্টলেকে সিল করা হল বিশ্ববিদ্যালয়

বাড়ির বাইরে লেখা ‘আধ্যাত্মিক ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়’। ভেতরে অল্পবয়সী মেয়েদের উপর ‘যৌন নির্যাতন ও শোষণ’ চলে বলে অভিযোগ জমা পড়েছিল সরকারের কাছে। তার পর ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়েছিল রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল। তারা ‘পরিবেশ সন্দেহজনক’ বলে রিপোর্ট দিয়েছে সরকারকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৫০
তালা: প্রতিষ্ঠানটির মূল ফটক সিল করা হচ্ছে। ছবি: শৌভিক দে।

তালা: প্রতিষ্ঠানটির মূল ফটক সিল করা হচ্ছে। ছবি: শৌভিক দে।

বাড়ির বাইরে লেখা ‘আধ্যাত্মিক ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়’। ভেতরে অল্পবয়সী মেয়েদের উপর ‘যৌন নির্যাতন ও শোষণ’ চলে বলে অভিযোগ জমা পড়েছিল সরকারের কাছে। তার পর ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়েছিল রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল। তারা ‘পরিবেশ সন্দেহজনক’ বলে রিপোর্ট দিয়েছে সরকারকে। প্রতিষ্ঠানে থাকাকালীন তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এক তরুণী। দু’বছর আগে প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁর মেয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে বলে ফের অভিযোগ করেছেন এক যুবতীর মা।

শুক্রবার বিধাননগরের সিএল ব্লকের ওই প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দেয় বিধাননগরের এসিজেএম আদালত। শনিবার প্রতিষ্ঠানটি সিল করে দিয়েছে পুলিশ। সেখান থেকে ৭ জন নাবালিকা, ৪ জন পূর্ণ বয়স্কা মহিলা-সহ ১৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে এক মহিলাকে। আটক দুই পুরুষ।

পুলিশ সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে মালিক রবীন্দ্রনাথ দাস বাড়িটি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃর্পক্ষকে ভাড়া দেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘ইদানীং বাচ্চা মেয়েদের উপর যৌন অত্যাচার চরমে উঠেছিল। বাধ্য হয়ে প্রথমে পুলিশকে এবং পরে মহিলা কমিশনে সব জানিয়েছি।’’ কিন্তু একই বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি আরও আগে বিষয়টি জানতে পারেননি, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

সম্প্রতি এক তরুণী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, আধ্যাত্মিক শিক্ষা দেওয়ার নাম করে তাঁকে আশ্রমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিছু দিন পর শিক্ষাদান বন্ধ হয়ে যায়। এর পর প্রতিষ্ঠানের এক কর্তা সেখানে এলে তাঁর সঙ্গে থাকতে বাধ্য করা হয় তাঁকে। ওই ব্যক্তি তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালায়। এর জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে আশ্রম থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনার কথা প্রকাশ করলে ক্ষতি করার হুমকিও দেওয়া হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ধর্ষণের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাড়ির মালিকের অভিযোগ পেয়ে দিন কয়েক আগে কমিশনের সদস্যদের নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে ভিতরে ঢুকতে বাধা পাই।’’ পরে পুলিশের সহায়তায় বাড়িতে ঢোকেন তাঁরা। লীনাদেবী বলেন, ‘‘বাড়িতে সাদা শাড়ি পরা কয়েক জন অল্পবয়সী মেয়েকে দেখতে পাই। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। ভেতরের পরিবেশ সন্দেহ করার মতোই। চার দিক অবরুদ্ধ। জানলাতেও শেকল দিয়ে তালা।’’ বয়স্ক কয়েকজন মহিলার হাবভাব এবং কথাবার্তাও সন্দেহজনক এবং অসংলগ্ন মনে হয়েছে কমিশনের।

ইতিমধ্যে দু’বছর আগে নিখোঁজ হওয়া এক যুবতীর মা কমিশনে গিয়ে ফের প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা এ দিন বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি দিল্লিতে একই অভিযোগে একটি সংস্থায় পুলিশি অভিযান হয়েছিল। জানা গিয়েছে ওই সংস্থার সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি সল্টলেকের ওই প্রতিষ্ঠানেরও অন্যতম কর্তা।’’

Molestation Girls University Police Raid আধ্যাত্মিক ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয় Ashram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy