খবর পেয়েই চমকে উঠেছিল পুলিশ। মধ্য কলকাতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রের দূতাবাসের অদূরে পার্লার কর্মী হিসাবে কাজ করছেন পাকিস্তানি মহিলা! সেই খবরের সূত্র ধরেই শুক্রবার বিকেলে ওই মহিলাকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন গোয়েন্দারা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, ওই মহিলা পাক নাগরিক হলেও বৈধ পাসপোর্ট এবং ভিসা নিয়ে এ দেশে এসেছেন। তাঁর স্বামী কলকাতার বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী। আপাতত তিনি স্বামীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়িতেই থাকছেন বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশের দাবি, এখনও পর্যন্ত ওই মহিলার সম্পর্কে বিরূপ কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি এ দেশে এসেছিলেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত তাঁর ভিসার মেয়াদ আছে। তবে ওই মহিলার সম্পর্কে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তেও উপনীত হননি গোয়েন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, মহিলার সম্পর্কে বিস্তারিত অনুসন্ধান চলছে। তাঁর মোবাইল ফোনটিও যাচাই করা হচ্ছে বলে খবর।
পুলিশের খবর, বছর কয়েক আগে কলকাতার ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে ওই মহিলার বিয়ে হয়েছিল। তার পর থেকেই তিনি বারবার এদেশে এসেছেন। তবে বিয়ে হওয়ার পরেও পাকাপাকি ভাবে শ্বশুরবাড়িতে কেন ওই মহিলা থাকছেন না, সেই প্রশ্ন উঠেছে অনেকের মনে। সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, কোনও পাকিস্তানি নাগরিক কলকাতায় ঢুকলে অভিবাসন দফতর মারফত সেই খবর গোয়েন্দাদের কাছে পৌঁছয়। এ ক্ষেত্রে তবে এত পরে পুলিশ জানতে পারল কেন? কোথাও সমন্বয়ের অভাব আছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
তবে পাকিস্তানি তরুণীর সঙ্গে কলকাতার যুবকের বিয়ে নিয়েও গোয়েন্দাদের মনে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন, এ ভাবে চর ঢুকিয়ে দেওয়া গুপ্তচর সংস্থাগুলির একটি বিশেষ কায়দার মধ্যে পড়ে। তাই এ ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। যদিও গোয়েন্দাদের একটি সূত্রের দাবি, ওই মহিলার পূর্বপুরুষ সম্ভবত দেশভাগের আগে কলকাতায় থাকতেন। পরে পাকিস্তানে চলে যান। সেই সূত্রেও কলকাতার ওই ব্যবসায়ী পরিবারের সঙ্গে তাঁদের যোগসূত্র থাকতে পারে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)