রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির ঘোষণা অনুযায়ী আজ, সোমবার রাত থেকে সমস্ত হিমঘর থেকে আলু বেরনো বন্ধ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকারকে চাপে ফেলতে শনিবার রাত থেকেই রাজ্যের অনেক হিমঘরের ঝাঁপ কার্যতবন্ধ করে দেওয়া হল। রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘শনিবার রাত থেকেই বীরভূম এবং বাঁকুড়া জেলায় যেখানে প্রতি রাতে ২০০ আলুর ট্রাক বার হয়, তার একটাও রাস্তায় নামেনি। আলু যদি রফতানিই না করা যায়, তা হলে তা বার করে লাভ কি?’’ এর জেরে রাজ্য জুড়ে খোলা বাজারে আলুর জোগান এবং চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাতৈরি হয়েছে। নতুন করে দাম বাড়তে পারে আলুর।
গত বুধবার থেকে আগাম ঘোষণা ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গের পড়শি চার রাজ্যের সীমানায় আলু বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়েছে। কৃষি বিপণন দফতর জানিয়েছে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাজ্যে যাতে আলুর ঘাটতি না হয়, সে জন্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এইপরিস্থিতিতে হিমঘরে আলু রাখার সময় আরও এক মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্তও হয়েছে শনিবার।
উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের হিমঘরগুলিতে এখনও ৭ লক্ষ টন আলু মজুত রয়েছে বলে রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির দাবি। তাঁদের সেই দাবিতে সিলমোহর দিয়েছেন হিমঘর মালিকেরাও। তাই ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠালে বঙ্গের মানুষের পাতে আলুতে টান পড়বেনা বলেই তাঁদের দাবি। উল্টে রাজ্য সরকার পড়শি রাজ্যগুলিতে আলু না পাঠালে অন্তত ৩০ হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আগাম নির্দেশিকা ছাড়া রফতানি বন্ধ করা করা যায় না কি? এর জন্য চার রাজ্যের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়িক চুক্তি লঙ্ঘিত হচ্ছে।’’ আলুর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রবিবার রাতে উত্তরপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘সরকার হস্তক্ষেপ না করলে চলতি সপ্তাহেরশেষাশেষি পেঁয়াজের মতোই আলুর দামও চড়তে থাকবে।’’
এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না কার্যত সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে শুরু করেছেন। যদিও তাঁর দফতরের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘আলুর বিষয়টি রাজ্য মনোনীত টাস্ক ফোর্সের কর্তারাই দেখেন। চলতি মরসুমে আলু চাষ বিলম্বিত হওয়ায় নতুন বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত পুরনো আলুর উপর রাজ্যবাসীকে নির্ভর করতে হবে। নতুন আলু বাজারে আসতে এ বার বাড়তি কিছুটা সময় লাগবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)