Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Pradhan Mantri Awas Yojana

আবাস যোজনায় কেন্দ্রীয় বরাদ্দের জট কাটল, তবে সময়ের শর্তই কাঁটা রাজ্যের

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে জানাচ্ছেন, জরিমানার এই ব্যবস্থায় ওই যোজনার বাড়ি তৈরির টাকায় হাত পড়বে না ঠিকই। তবে প্রশাসনিক খরচের তহবিল কমলে তা পূরণ করতে হবে রাজ্যকেই।

প্রায় আট মাস পরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে আবার কাজ শুরু করার অনুমতি পেল রাজ্য সরকার।

প্রায় আট মাস পরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে আবার কাজ শুরু করার অনুমতি পেল রাজ্য সরকার। ফাইল চিত্র।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২ ০৭:০৩
Share: Save:

দীর্ঘ প্রায় আট মাস পরে পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কেন্দ্রীয় বরাদ্দের জট কাটলেও কিছু কাঁটা থেকেই যাচ্ছে। কারণ, দিল্লির ‘অনুমোদনের’ সঙ্গে কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধান শর্ত, সময় মেনে বাড়ির কাজ করতে হবে, নইলে হবে জরিমানা। কেন্দ্রের সুস্পষ্ট বার্তা, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না-পারলে বাড়ি-পিছু জরিমানা করা হবে। জরিমানার টাকা কেটে নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের প্রশাসনিক তহবিল থেকে।

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে জানাচ্ছেন, জরিমানার এই ব্যবস্থায় ওই যোজনার বাড়ি তৈরির টাকায় হাত পড়বে না ঠিকই। তবে প্রশাসনিক খরচের তহবিল কমলে তা পূরণ করতে হবে রাজ্যকেই।

কারণ, ওই তহবিল থেকেই কর্মী-সহায়কদের বেতন বা সাম্মানিক দেওয়া হয় এবং চালানো হয় অন্য খরচ। আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, প্রকল্পে ‘জিও-ট্যাগ’ (বাড়ি সম্পূর্ণ হওয়ার প্রমাণ) যাঁরা করেন, তাঁদের এবং ডেটা-এন্ট্রি অপারেটরদের সাম্মানিক দেওয়া, কার্যালয় পরিচালনা করা হয় প্রশাসনিক তহবিল থেকে।

এই জরিমানা-কাঁটা কতটা রক্তাক্ত করতে পারে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আধিকারিকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, কোষাগারের যা হাল, তাতে পরিস্থিতি এমন দিকে গেলে ভুগতে হবে রাজ্যকেই। নবান্ন সূত্রের খবর, সেই কারণে সব জেলাশাসককে ফের সতর্ক করে দিয়ে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানিয়েছেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব’ থেকে পুরোপুরি মুক্ত হয়েই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে হবে। উপভোক্তার তালিকা তৈরি থেকে শুরু করে প্রকল্পের কাজকর্ম— কোনও কিছুতেই ‘কারও’ কথা শোনার প্রয়োজন নেই।

এই ‘কারও’ মানে যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, সেটা সংশ্লিষ্ট কারও কাছেই অস্পষ্ট থাকছে না। ঠিক এক বছর আগে, ১৮ নভেম্বর হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সতর্কবার্তা ছিল, “প্রকল্পের কাজ সরাসরি করবে, যাতে কেউ এখান থেকে টাকাপয়সা নিতে না-পারে। যার প্রয়োজন আছে, একমাত্র সে-ই বাড়ি পাবে।” কিন্তু তার পরেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের নাম বদল -সহ নানা অভিযোগে আটকে গিয়েছিল বরাদ্দও। কার্যত জবাবদিহি করে মুখ্যসচিবের তরফে সব নিয়ম মেনে চলার আশ্বাস দিতে হয়েছিল কেন্দ্রকে।

কেন্দ্র জানিয়েছে, উপভোক্তাকে বাড়ির অনুমোদন দেওয়া, পাঁচটি কিস্তির প্রতিটিতে বিলম্ব হলে এবং প্রকল্পের প্রতিটি পর্যায়ের ছবি অনুমোদনে দেরি হলে বাড়ি-পিছু জরিমানা করা হবে। গত ১ অক্টোবর থেকে এই নিয়ম বলবৎ হবে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্র। ওই তারিখের আগে জরিমানা হবে না।

তাই মুখ্যসচিবের নির্দেশ, ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বাড়ির অনুমোদন দেওয়ার কাজ শেষ করতে হবে। ৩১ মার্চের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে হবে প্রকল্পের কাজ। এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “সব রাজ্যের জন্যই এই নিয়ম চালু করেছে কেন্দ্র। তবে এ রাজ্যের কাজটা কঠিন। কারণ, গত মার্চে যে-কাজ শুরু করার কথা ছিল, সেটা এত দেরিতে হবে। এত অল্প সময়ে ১১.৩৪ লক্ষ বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করা মুখের কথা নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pradhan Mantri Awas Yojana West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE