Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মমতার সাক্ষাৎ আনন্দের, মুগ্ধ খোদ রাষ্ট্রপতি

মঞ্চে বসা মুখ্যমন্ত্রীকে দেখিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে দেখা হওয়াটা সব সময়েই আনন্দের।’’ দৃশ্যতই মুখ্যমন্ত্রীর মুখে তখন সলজ্জ হাসি। তুমুল হাততালি প্রেক্ষাগৃহে।

মঞ্চে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে

মঞ্চে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে

মধুমিতা দত্ত
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৮ ০৬:০২
Share: Save:

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সামনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় মুখর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। জানিয়ে দিলেন মমতার সঙ্গে দেখা হওয়া সব সময়েই আনন্দের।

শুক্রবার খড়্গপুর আইআইটি-র ৬৪তম সমাবর্তনে দীক্ষান্ত ভাষণে আইআইটিগুলিতে ছাত্রীদের ভর্তির হার তুলনামূলক কম হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে খড়্গপুর আইআইটিকে সক্রিয় হতে হবে। কারণ, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান এমন একটি রাজ্যে, যেখান থেকে বিখ্যাত মহিলারা উঠে এসেছেন। যাঁরা দেশ গঠনে বড় ভূমিকা নিয়েছেন। আমাদের সৌভাগ্য, তাঁদের অন্যতম, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ আমাদের মধ্যে রয়েছেন।’’ এর পরেই মঞ্চে বসা মুখ্যমন্ত্রীকে দেখিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে দেখা হওয়াটা সব সময়েই আনন্দের।’’ দৃশ্যতই মুখ্যমন্ত্রীর মুখে তখন সলজ্জ হাসি। তুমুল হাততালি প্রেক্ষাগৃহে। দর্শকাসনের সামনের সারিতে তখন বসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি এবং খড়্গপুর সদরের বিধায়ক দিলীপবাবু।

রাষ্ট্রপতি জানান, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্র ছেলেদের থেকে এগিয়ে চলেছে মেয়েরা। কিন্তু আইআইটিগুলিতে ছাত্রীর সংখ্যা শোচনীয় রকম কম। পরিসংখ্যানও দেন তিনি। ২০১৭ সালে জয়েন্ট এন্ট্রান্স (অ্যাডভান্সড) পরীক্ষা দেন এক লক্ষ ৬০ হাজার পড়ুয়া। তাঁদের মধ্যে ছাত্রী ছিলেন মাত্র ৩০ হাজার জন। ওই বছর দেশের সব আইআইটিতে স্নাতক স্তরে ভর্তি হন ১০ হাজার ৮৭৮ জন। তাঁদের মধ্যে ছাত্রী মাত্র ৯৯৫ জন। এই মুহূর্তে ১১ হাজার ৬৫৩ জন পড়ুয়া আছেন খড়্গপুর আইআইটিতে। ছাত্রীর সংখ্যা ১৯২৫। অর্থাৎ ১৬ শতাংশের মাত্র কিছু বেশি ছাত্রী খড়্গপুরে রয়েছেন।

‘‘এটা চলতে পারে না। এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা দরকার,’’ বলেন রাষ্ট্রপতি। তিনি জানান, দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই উচ্চশিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানো দরকার। এ ক্ষেত্রে আইআইটিগুলিকে এগিয়ে আসতে হবে। সক্রিয় হতে হবে খড়গপুর আইআইটিকে। এর পরেই দেশ গঠনে বাংলার বিখ্যাত মহিলাদের অবদানের উল্লেখ করেন কোবিন্দ।

এর আগে ভাষণ দিতে উঠে খড়্গপুর আইআইটি-র ভূয়সী প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ভাষণের সময় হল জুড়ে বারবার হাততালির স্রোত বয়ে যায়। রাষ্ট্রপতি ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, খড়্গপুর আইআইটি-র অধিকর্তা পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য এ দিন আসতে কিছুটা দেরি হয় রাষ্ট্রপতির। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বেলা ১১টা নাগাদ রাষ্ট্রপতির আইআইটি-তে পৌঁছনোর কথা ছিল। দিল্লি থেকে বিমানে কলাইকুন্ডা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নামেন তিনি। প্রথমে ঠিক ছিল, সেখান থেকে হেলিকপ্টারে খড়্গপুরে পৌঁছবেন। বিকল্প ব্যবস্থাও ছিল। খারাপ আবহাওয়ার জন্য কলাইকুন্ডা থেকে সড়কপথে আইআইটিতে পৌঁছন রাষ্ট্রপতি। ঝড়বৃষ্টির জন্য নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছু পরে, ১১টা ৩৫ মিনিট নাগাদ শুরু হয় সমাবর্তন অনুষ্ঠান। তার আগে অনুষ্ঠানস্থলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল বেশ কিছু ক্ষণ। পরপর বাজ পড়ে নষ্ট হয়ে যায় অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য লাগানো বেশ কয়েকটি এলইডি টিভি। অনুষ্ঠান শুরুর মুখেই বোঝা যায়, সাউন্ড সিস্টেমও খারাপ হয়ে গিয়েছে। তড়িঘড়ি সারিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তবে তার পরে গোটা অনুষ্ঠানে আর কোনও বিঘ্ন ঘটেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE