E-Paper

মণিপুরের অশান্তির আঁচ হেঁশেলে, সঙ্গত দিয়েছে উত্তপ্ত আবহাওয়াও 

থলি হাতে বাজারে ঢুকলেই কেউ হাঁকছেন সেঞ্চুরি, কেউ বা সেঞ্চুরির দোরগোড়ায়। কেজি প্রতি বেগুন ১০০ টাকা, শতকের ঘরে পৌঁছে গিয়েছে ডাঁটা এবং উচ্ছেও। আদা ট্রিপল সেঞ্চুরি করে ৩০০ টাকা কেজিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৩ ০৭:৫৬
An image of market

—প্রতীকী চিত্র।

টানা দীর্ঘদিন বৃষ্টিহীন থাকার পরে রাজ্যে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তবুও বাজারে আনাজপাতি কিনতে গেলে কেন পকেটে ছেঁকা লাগছে? বাজারদর বিশ্লেষকদের মতে, মাসকয়েক ধরে বৃষ্টি কম হয়েছে। আনাজের দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ কম বৃষ্টি। এর সঙ্গে জুড়েছে পঞ্চায়েত ভোটের চোখরাঙানি। সেটাও দাম বৃদ্ধির কারণ বলে মনে করছেন চাষিরা।

তাই থলি হাতে বাজারে ঢুকলেই কেউ হাঁকছেন সেঞ্চুরি, কেউ বা সেঞ্চুরির দোরগোড়ায়। কেজি প্রতি বেগুন ১০০ টাকা, শতকের ঘরে পৌঁছে গিয়েছে ডাঁটা এবং উচ্ছেও। পটলের দাম ৬০-৭০ টাকা কেজি, ঝিঙে ৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৮০ টাকা, টোম্যাটো ৮০ টাকা, লঙ্কা ১৫০ টাকা। আদা অবশ্য ট্রিপল সেঞ্চুরি করে ৩০০ টাকা কেজিতে। আদার ব্যাপারিরা বলছেন, ‘‘শীতের দু’-তিন মাস শুধু এ রাজ্যে আদা পাওয়া যায়। বাকি সময়আদা আসে মণিপুর থেকে।’’ সেই মণিপুরে চলতে থাকা অশান্তিই আদার দাম বাড়ার কারণ। অশান্তির জন্য সেখান থেকে আদা-বোঝাই গাড়ি আসা এখন বন্ধ। ফলে, এখন আদা আসছে দক্ষিণ ভারত থেকে। তা মোটেও পর্যাপ্ত নয়।

কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের সঙ্গে আনাজের দামের সম্পর্কটা কী? ব্যাখ্যা করছেন ‘পশ্চিমবঙ্গ চাষি ভেন্ডর অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি তথা কোলে মার্কেটের জনসংযোগ আধিকারিক কমল দে। তাঁর যুক্তি, ‘‘সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। গ্রামের মানুষের কাছে এই ভোটের গুরুত্ব অনেক বেশি। ভোটে দাঁড়ানো প্রতিনিধিদের অনেকেই হয়তো চাষিদের আত্মীয়, বন্ধু বা পরিচিত। ওই প্রতিনিধিরা প্রচারে বেরোলে অনেক সময়ে তাই চাষিদেরও সঙ্গে যেতে হচ্ছে। ফলে ভোট পর্যন্ত অনেক চাষিই ফসল ফলানোয় ততটা মনোনিবেশ করতে সময় পাচ্ছেন না। যে কারণে আনাজের জোগান কমছে। আর দাম বাড়ছে আনাজপাতির।’’

কমলের কথায়, ‘‘সবে বর্ষা এসেছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে যে ভাবে বৃষ্টিহীন কাঠফাটা রোদ ছিল, তাতেই চাষের জমিতে বহু ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গত এক মাস ধরে বাজারে ফসলের জোগান তাই এমনিতেই কম।’’ চাষিদের মতে, অত্যধিক গরমে মাটির নীচ উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। ওই মাটি পুরোপুরি ভিজতে সাত-আট দিন টানা বৃষ্টি দরকার।

গড়িয়াহাট বাজারের সম্পাদক দিলীপ মণ্ডল বলছেন, ‘‘উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, হাওড়া এবং হুগলি থেকেই মূলত কলকাতার বাজারে আনাজ আসে। প্রায় সব জেলা থেকেই আনাজের আমদানি গত এক মাস ধরে কম। শীতে এ রাজ্যে হলেও এখন টোম্যাটো আসে বেঙ্গালুরু থেকে। সে রাজ্যে টোম্যাটোর উৎপাদন কম হওয়ায় এ রাজ্যেও জোগান কমেছে। ফলে টোম্যাটোর দাম ৪০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা কেজি হয়েছে।’’

চাষিদের অনেকেই জানান, ডিজ়েলের দাম খুব চড়া হওয়ায় পাম্পের সাহায্যে জল তুলে ফসলে জল দেওয়াও এখন যথেষ্ট খরচসাপেক্ষ। কিন্তু, ফসল বাঁচাতে সেই কাজ করতে হয়েছে। যে কারণেও এই মুল্যবৃদ্ধি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

market price Price Hike Manipur Violence hot temperature

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy