বিপুল পরিমাণ বকেয়ার বিরুদ্ধেই মুখ্যমন্ত্রী বুধ এবং বৃহস্পতিবার রেড রোডে ধর্না দিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত।
বকেয়া আদায়ের দাবিতে দু’দিন ধর্নায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ধর্না কর্মসূচি শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা মধ্যেই কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পেল রাজ্য। ১০০ দিনের কাজের অর্থ বন্ধ প্রায় দেড় বছর। এ ছাড়াও, আবাস, সড়ক যোজনা-সহ মোট ১০৬টি প্রকল্পে বরাদ্দ বন্ধ রেখেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার, এমনটাই অভিযোগ রাজ্য সরকারের। পাল্টা বিজেপির জবাব, আগে পাওয়া কেন্দ্রীয় সরকারি অর্থের হিসেব দিতে না পারাতেই বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনও রাজনীতি নেই। এমনই সংঘাতের আবহে একটি প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ রাজ্যকে দিয়েছে কেন্দ্র।
এই বরাদ্দ এসেছে মিড ডে মিলের জন্য। বরাদ্দ হয়েছে ৬৩৮ কোটি টাকা। যা রাজ্য সরকারের বকেয়ার দাবির কাছে অনেকটাই কম বলে মনে করছে নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্য সরকারের পাওনার পরিমাণ এক লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা। রাজ্যের পাওনার মধ্যেই রয়েছে মিড ডে মিলের বিষয়টিও। নবান্নের একাংশ মনে করছে, গত জানুয়ারি মাসে মিড ডে মিলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছিল কেন্দ্রীয় সরকারের এক প্রতিনিধিদল। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেই এ বার গত অর্থবর্ষের বকেয়া বরাদ্দ পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থ পাঠালেও যে পশ্চিমবঙ্গের মিড ডে মিল পরিষেবা নিয়ে কেন্দ্রীয় নজরদারি চলবে, তা ইতিমধ্যে স্পষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্র। কারণ রাজ্যের মিড ডে মিল নিয়ে অডিট চলবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে গত মার্চ মাসেই।
মিড ডে মিল নিয়ে বকেয়া বরাদ্দ পাঠালেও, অন্য ক্ষেত্রে বকেয়ার টাকা কবে পাওয়া যাবে তা নিয়ে কোনও সংবাদ নবান্নকে জানায়নি কেন্দ্রীয় সরকার। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। এই খাতে রাজ্যের বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। আবার আবাস যোজনায় ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকাও বকেয়া রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ বকেয়ার বিরুদ্ধেই মুখ্যমন্ত্রী বুধ এবং বৃহস্পতিবার রেড রোডে ধর্না দিয়েছেন। ধর্নার শেষের দিন তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রাজধানী দিল্লিতে গিয়ে ধরনা দেওয়ার। আর সেই হুঁশিয়ারির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই অল্প হলেও, রাজ্য পেল তার বকেয়া বরাদ্দের একাংশ। তবে এই বরাদ্দের পরেও যে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত বজায় থাকবে সে বিষয়ে নিশ্চিত রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy