Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Bhabanipur Bypoll

Bhabanipur Bypoll: মনোনয়নের আগে ধুনুচি-নৃত্য প্রিয়ঙ্কার

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বরাদ্দ ঘরের দরজা থেকে এ দিন তাঁর নেমপ্লেট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ঘরটিকেও ভবানীপুরের ভোটের কাজে ব্যবহার করা হবে।

ভবানীপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের ধুনুচি নাচ। সোমবার এলগিন রোডে।

ভবানীপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের ধুনুচি নাচ। সোমবার এলগিন রোডে। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:০০
Share: Save:

ভবানীপুরের উপনির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন সোমবার মনোনয়ন জমা দিলেন বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল এবং সিপিএম প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাস। প্রিয়ঙ্কা এবং শ্রীজীব দু’জনেই আইনজীবী। প্রিয়ঙ্কা মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি অর্জুন সিংহ, সাংসদ তথা দলের যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ এবং প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। তাৎপর্যপূর্ণ হল, চার জনই তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যাওয়া নেতা। প্রিয়ঙ্কা, শুভেন্দুরা এলগিন রোডের গোলবাড়ি মন্দিরে পুজো দিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে, ধুনুচি-নাচ নেচে আলিপুরের সার্ভে বিল্ডিংয়ে গিয়ে মনোনয়ন জমা দেন। সিপিএম প্রার্থী শ্রীজীব মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের কলকাতা জেলা নেতৃত্ব।

প্রিয়ঙ্কার মনোনয়নে সঙ্গী হয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমরা মন্দিরে প্রণাম করে পঞ্জিকামতে শুভ কাজে এসেছি। এই লড়াই প্রিয়ঙ্কার একার নয়। এটা রাজ্যের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের লড়াই। নন্দীগ্রামের মানুষ বিজেপির প্রতীকে আমাকে জিতিয়েছিলেন। ভবানীপুরেও মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে পদ্মফুলের প্রার্থী পশ্চিমবঙ্গের লড়াকু মেয়ে প্রিয়ঙ্কা জিতবেন। এক জন মানুষকে ঘরছাড়া করেছেন। আর এক জন ঘরছাড়া মানুষকে ঘরে ফেরানোর লড়াই লড়েছেন। ভবানীপুরের মানুষ সেটা জানেন।’’ কোভিড পরিস্থিতি সত্ত্বেও ভোটারদের ভোট দিতে যাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘আশা করব, ভোটার ভদ্রমণ্ডলী বাড়িতে বসে থাকবেন না। ভবানীপুরের ভোটাররা অন্তত একটা টিকা পেয়ে গিয়েছেন। একদম চিন্তা করবেন না। মুখে মাস্ক লাগিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।’’

মনোনয়ন জমা দিয়ে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়ছেন মুখ্যমন্ত্রীর আসন ছাড়তে চান না বলে। আর আমি লড়ছি রাজ্যের মানুষকে বাঁচানোর জন্য। উনিও গত বার ভোটে হেরে আবার লড়ছেন। আমিও তা-ই। আমাদের স্লোগান, বাংলা বাঁচাও, বাঙালিকে বাঁচাও।’’ বিজেপি নেতারা ভবানীপুরের ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন মূলত হেস্টিংস কার্যালয়ে বসে। সেখানে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বরাদ্দ ঘরের দরজা থেকে এ দিন তাঁর নেমপ্লেট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ঘরটিকেও ভবানীপুরের ভোটের কাজে ব্যবহার করা হবে।

পাশাপাশি, মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে সিপিএম প্রার্থী শ্রীজীব বলেছেন, ‘‘ভবানীপুরে এই নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর পদকে স্থায়ী করার জন্য। অথচ রাজ্যে এখন যতটুকু চাকরি হচ্ছে, সেখানে কারও স্থায়ী কাজ হচ্ছে না!’’ শিল্প, পরিকাঠামো, কর্মসংস্থানের মতো বিষয়ে গোটা রাজ্যের যা সমস্যা, ভবানীপুর তার চেয়ে আলাদা নয় বলে উল্লেখ করেছেন সিপিএম প্রার্থী। ছোট ছোট এলাকা ধরে প্রচারে এই কথাই বলছেন তিনি। পাশাপাশিই শ্রীজীবের বক্তব্য, ‘‘পেট্রল, ডিজ়েল, রান্নার গ্যাস থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়ে চলেছে। এই দুর্বিষহ পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রে যাদের সরকার দায়ী, সেই বিজেপিকে উচিত জবাব দিতে হবে।’’

বিধানসভা ভোটে ভবানীপুর কেন্দ্রে যখন প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি শাদাব খান প্রার্থী হয়েছিলেন, তখন তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন সিপিএমের শ্রীজীব। কিন্তু এ বার মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে কংগ্রেস ভবানীপুরের প্রচার থেকেও দূরে থাকায় শাদাব এসে শ্রীজীবের পাশে দাঁড়াতে পারছেন না! ফোনে দুই যুব নেতার শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে।

এ দিকে, এ দিন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের সঙ্গে দেখা করে ভবানীপুর, শমসেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের দাবি জানান অর্জুন, সৌমিত্র, দীনেশ এবং শিশির বাজোরিয়া। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে দেওয়া চিঠিতে তাঁদের দাবি, তিনটি কেন্দ্রের সব বুথেই কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং রাজ্য বা কলকাতা পুলিশকে বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া চলবে না, রাজ্য সরকারি কর্মীদের বুথের ভিতরে ভোটের কাজে লাগানো যাবে না এবং কোভিড পরিস্থিতি মাথায় রেখে রাজনৈতিক দলগুলির পোলিং এজেন্টদের বুথের বাইরে বা দরজার সামনে বসার ব্যবস্থা করতে হবে।

বিজেপির এই দাবির জবাবে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘রাজ্যের ভোটাররা ওদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। রাজ্যের পুলিশ, সরকারি কর্মীদের উপর বিজেপি নেতার ভরসা নেই। কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের দিয়ে ভোট করান, আপত্তি নেই। এ বার কি তা হলে ‘কেন্দ্রীয় ভোটার’ও নিয়ে আসবেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE