এই মুহূর্তে পঞ্চায়েত নির্বাচনই শাসক দল ও রাজ্য সরকারের পাখির চোখ বলে রাজনৈতিক শিবির-সহ সংশ্লিষ্ট সব মহলের পর্যবেক্ষণ। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, সেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হবে না। কিন্তু আন্দোলনরত পড়ুয়াদের দাবি, ছাত্রভোট করাতে হবে অবিলম্বে। এটা তাঁদের গণতান্ত্রিক দাবি এবং তা না-মানলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
প্রায় ছ’বছর ধরে রাজ্যের চারটি একক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আর কোনও বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে ছাত্রভোট হয়নি। শুধু প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর, রবীন্দ্রভারতী ও ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একক বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ ছাত্রভোট হয়েছিল ২০১৯ সালে। বেশ কিছু দিন ধরেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বার বার ছাত্রভোটের দাবি তুলছেন।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আগে জানিয়েছিলেন, তাঁরা ছাত্রভোট করতে আগ্রহী। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এখনই নয়। পঞ্চায়েত ভোটের পরেই ছাত্রভোট করাতে চায় রাজ্য সরকার।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবিলম্বে ছাত্রভোটের দাবিতে একটানা দু’সপ্তাহেরও বেশি অবস্থান চালিয়েছে এসএফআই। সেখানকার এসএফআই ইউনিটের সম্পাদক ঋষভ সাহা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ছাত্রভোট করাতে চায় না। কারণ, ওরা জানে, যদি একবার নির্বাচন শুরু হয়, প্রতিটি ক্যাম্পাস থেকে তৃণমূল-বিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তিগুলি এক হয়ে ওদের গেটের বাইরে ফেলে দেবে।’’ ঋষভের বক্তব্য, ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল কলেজ, প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর, কালনা কলেজ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্বাচনের দাবি উঠেছে। মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের মতো করে ভোট করিয়েছেন। দরকারে সেই রকম ‘রেফারেন্ডাম’ হবে অন্যত্রও।
ছাত্রভোটের দাবিতে যাদবপুরে একটানা মিছিল ও অবস্থান করছে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির ছাত্র সংসদ (ফেটসু)। ফেটসুর বিদায়ী চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদার এ দিন বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের প্রশ্নে মোদী-মমতার আর কোনও ফারাক থাকছে না। বাংলার বৃহত্তর ছাত্রসমাজ, নাগরিক সমাজ, গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষজন এটা দেখছেন। লড়াই আর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্রসমাজ এর যোগ্য জবাব দেবে।’’
তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-র সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘একটু পরে ছাত্রভোট হলেও কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু আমরা চাই, সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন হোক। নির্বাচনের জন্য আমরা সব দিক থেকেই তৈরি।’’ বিরোধীদের কটাক্ষ করে তাঁর বক্তব্য, বিরোধীরা আগে সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনিট খুলুক। তার পরে তো ভোটে লড়বে!
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)