Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দেশপ্রেমের জিগির বন্ধ হোক, সরব নানা সংগঠন

রাজ্যে গোলমালের চেষ্টা হলে প্রশাসনকে যথোচিত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

দেশপ্রেমের জিগির তুলে একাধিক জায়গায় যে অশান্তির আবহ তৈরি করা হচ্ছে, উঠছে অভিযোগ। ছবি: পিটিআই।

দেশপ্রেমের জিগির তুলে একাধিক জায়গায় যে অশান্তির আবহ তৈরি করা হচ্ছে, উঠছে অভিযোগ। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:০৮
Share: Save:

দেশপ্রেমের জিগির তুলে একাধিক জায়গায় যে অশান্তির আবহ তৈরি করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে রাজ্যের শাসক-সহ প্রথম সারির রাজনৈতিক দলগুলি ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে। সেই প্রতিবাদে এ বার সামিল হল অন্যান্য সংগঠনও। রাজ্যে এ ধরনের গোলমালের চেষ্টা হলে প্রশাসনকে যথোচিত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তারপরেও মঙ্গলবার বিভিন্ন জায়গা থেকে হুমকি, মারধর, ভয় দেখানোর অভিযোগ এসেছে। তাই বিভিন্ন সংগঠন কড়া প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি তুলেছে।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘যারা ঘৃণা ছড়িয়ে উত্তেজনা ও উন্মাদনা সৃষ্টি করছে,রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উল্টে যাঁরা এর প্রতিবাদ করছেন, তাঁদেরই মুখ বন্ধের চেষ্টা করছে।’’ রাজ্য সরকার মুখে এই ‘অরাজকতা’ বন্ধের কথা বললেও তারা বিরোধীদের গণতান্ত্রিক অধিকারে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সূর্যবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘যেদিন কলকাতায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে, সেই দিনই মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে শাসকদলের মোমবাতি মিছিল সুসম্পন্ন করতে ১৭টি দলের ডাকা মিছিলে বারবার বাধা দেওয়া হয়েছে। অথচ পূর্বঘোষিত ওই কর্মসূচি ছিল পুলওয়ামার পরিপ্রেক্ষিতে। গ্রামীণ সম্পদ কর্মীদের মিছিলেও লাঠিচার্জ করা হয়েছে।’’সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষের অভিযোগ, ‘‘সাম্প্রদায়িক শক্তির সক্রিয়তা মোকাবিলায় রাজ্যের পুলিশ-প্রশানের ব্যর্থতা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে। কুযুক্তিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে মিছিল-মিটিংয়ে।’’

তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘প্রশাসন সর্বত্র সজাগ আছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে। যাঁরা বিজেপির এই ধরনের কাজকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তাঁরা আরও ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসুন।’’

রাজ্যের ‘শিল্পী, সাংস্কৃতিক-কর্মী-বুদ্ধিজীবী মঞ্চ’-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এক দল মানুষ নিজেদের গায়ে ‘দেশপ্রেমী’ তকমা সেঁটে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সাধারণ মানুষদের যে ভাবে আক্রমণ করে চলেছে, তা কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। দেশপ্রেমেরে ধার দিয়েও যারা যায়নি কখনও, দেশের জন্য যাদের কণামাত্র ত্যাগ নেই, তারাই স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য অন্যকে ‘দেশদ্রোহী’ রূপে দাগিয়ে দিচ্ছে, আর নেতারা বলছেন, এ তো ‘গণরোষ’!

মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রঞ্জিৎ সুর বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য পুলিশের ডিজি-র কাছে অনুরোধ করেছি, রাজ্য জুড়ে যা চলছে, তা বন্ধ করা হোক। কলকাতায় আজ, বুধবার একটি মিছিলেরও ডাক দেওয়া হয়েছে যুদ্ধ-জিগির এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন বন্ধের পক্ষে।’’ এসইউসি নেতা তরুণকান্তি নস্করও বলেন, ‘‘সামগ্রিকভাবে এই সমস্ত বিষয় এক ফ্যাসিস্তসুলভ পরিবেশের জন্ম দিচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারকে বা কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE