ভেঙে পড়া সেই ‘বিপজ্জনক বাড়ি’। —নিজস্ব চিত্র।
টানা বৃষ্টিতে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বাঁকুড়া শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের একটি পুরনো বাড়ি। শনিবার সকালে পুরনো ওই বাড়িটি ভেঙে পড়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন ওই বাড়িতে বসবাস করা একাধিক পরিবারের সদস্যেরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন। আপাতত ওই বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবাসিকদের অন্যত্র সরানোর কাজ শুরু করেছে বাঁকুড়া পুরসভা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বাঁকুড়া শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইঁদারাগোড়া এলাকায় ভেঙে পড়া বাড়িটি প্রায় একশো বছরের পুরনো। তিন-চারটে পরিবার ভাড়া থাকত। তবে দীর্ঘ দিন বাড়িটির সংস্কার হয়নি। মাঝেমধ্যেই বাড়িটির পলেস্তারা খসে পড়লেও বিকল্প আস্তানা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে বিপজ্জনক বাড়িটিতে বসবাস করতেন ভাড়াটেরা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগেই বাড়িটিকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করে বাড়িমালিক এবং বাসিন্দাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও পক্ষই কোনও পদক্ষেপ করেননি। তার পরেই শনিবারের ওই ঘটনা।
বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজীব দে ঘটনাস্থলে যান। পৌঁছে যায় পুলিশও। রাজীব বলেন, ‘‘বাড়িটি বিপজ্জনক হিসাবে চিহ্নিত করে আগেই মালিককে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। ভাড়াটেদেরও সরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। শনিবারের দুর্ঘটনার পরে ওই তিনটি বাড়ির বাসিন্দাদের থাকার ব্যবস্থা করেছে পুরসভা।’’ ওই বিপজ্জনক বাড়িতে বসবাসকারীদের মধ্যে রাহুল শর্মা নামে এক জন বলেন, ‘‘আমাদের পরিবার এখানে ৮০ বছর ধরে ভাড়াটে হিসাবে রয়েছে। বাড়িটির অবস্থা দীর্ঘ দিন ধরেই খারাপ। সেটা বাড়িমালিকও জানেন। কিন্তু তিনি বাড়িটি সংস্কার না করে আমাদের বাড়ি ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু অন্যত্র ভাড়া বেশি হওয়ায় নিরুপায় হয়েই এখানে বসবাস করছিলাম। বাড়ি ধসে পড়ায় এখন মাথার উপর ছাদ হারালাম আমরা।’’ ওই বাড়ি থেকেই দীর্ঘ দিন ধরে নিজের ব্যবসা করছেন বিষ্ণু বর্মা। তিনি বলেন, ‘‘আমার এখানে দর্জির দোকান ছিল। আগে ভাড়াটে হিসাবে ছিলাম। তবে কিছু দিন হল অন্যত্র উঠে গিয়েছি। শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। তবে কেউ যে হতাহত হননি, সেটাই বড় কথা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy