অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক খুনে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম কালীপদ মুর্মু ও গৌতম কালিন্দী। কালীপদবাবুকে পুলিশ আগেই আটক করে জি়জ্ঞাসাবাদ করছিল। তিনি সম্পর্কে নিহতের মেজ ভাইয়ের মেজ জামাই। বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের লালগড় থানার বীরভানপুর গ্রামে। পেশায় শিক্ষক কালীপদবাবু ঘাটালের একটি হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন।
বছর তিরিশের গৌতমের বাড়ি লালগড় থানার সিজুয়া গ্রামে। মঙ্গলবার রাতে সারেঙ্গা থানার পারুলিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার ধৃতদের খাতড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। খুনের ঘটনায় নিহতের মেজ ভাইয়ের ছোট জামাই পূর্বনাথ সোরেন ও কার্তিক মুর্মুকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাইপুর থানার আইসি মণিময় সিংহ রায়, সারেঙ্গা থানার আইসি সুমন চট্টোপাধ্যায় এবং বারিকুল থানার ওসি সলিল পালের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল বেশ কিছু সূত্র পেয়েছে। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রবিবার ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে খুন হন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রূপচাঁদ মান্ডি (৭০)। ডাইন অপবাদে তাঁকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করানো হয়েছে বলে নিহতের স্ত্রী কল্যাণী মান্ডি এবং ছোটমেয়ে সাগুন অভিযোগ করেছিলেন। কল্যাণীদেবী তাঁর জা হীরামণি মান্ডি এবং জায়ের তিন জামাই মনোহর মুর্মু, কালীপদ মুর্মু এবং পূর্বনাথ সোরেনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সোমবার ভোরেই অভিযুক্ত তিন জামাইকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পরে পূর্বনাথ ও কালীপদকে গ্রেফতার করা হলেও মনোহরকে এখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। অন্যদিকে গ্রেফতার হওয়া গৌতম কালিন্দীর নাম এফআইআর-এ নেই। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, খুনের কথা ধৃতেরা জেরায় স্বীকার করেছে। তদন্তের পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই দিন কার্তিক মুর্মু এবং গৌতম কালিন্দী রূপচাঁদবাবুকে লক্ষ করে ওয়ান শটার এবং নাইন এমএম পিস্তল থেকে গুলি চালায়।
পুলিশের দাবি, রূপচাঁদবাবু যে প্রতিদিন ভোরে গ্রামের মাঠে একাই শৌচকর্ম করতে যান তা আততায়ীরা জানত। ওই সময়েই তাঁকে ‘টার্গেট’ করে খুনের ছক কষা হয়। ঘটনার আগের রাতে ভাড়াটে খুনিরা গ্রামে এসে আশ্রয় নেয়। রবিবার ভোরে পুকুর পাড় লাগোয়া মাঠে ওঁত পেতে বসেছিল তারা। রূপচাঁদবাবুকে লক্ষ করে দু’জন গুলি চালায়। দু’টি গুলি শরীরে বেঁধে। দু’টি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। কাজ সেরে মোটরবাইকে চড়ে আততায়ীরা গ্রাম ছেড়ে পালায়। ওই সময় গ্রামের কয়েক জন আততায়ীদের পালাতে দেখলেও ভয়ে কেউ সে কথা জানাতে চাননি বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের জাল অনেকটাই গুটিয়ে আনা হয়েছে। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র এবং মোটরবাইক উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ দিন ধৃতদের আদালতে হাজির করানোর সময় তাঁরা কোনও কথা বলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy