Advertisement
E-Paper

বাল্যবিবাহ রুখতে নাটকে বার্তা স্কুলে

শুক্রবার লাভপুরের ইন্দাস প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই নাটক মঞ্চস্থ হয়। স্কুলে প্রশিক্ষণরত লাভপুরের একটি বেসরকারি শিক্ষক শিক্ষণ কলেজের শিক্ষার্থীদের লেখা এবং নির্দেশিত ওই নাটকে অভিনয় করে স্কুলের কচিকাঁচারা। নাটকে দেখানো হয়, কী ভাবে একটি মেয়েকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

অর্ঘ্য ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:১৯
অভিনয়: বাল্যবিবাহ রুখতে নাটক। লাভপুরে। ছবি: কল্যাণ আচার্য

অভিনয়: বাল্যবিবাহ রুখতে নাটক। লাভপুরে। ছবি: কল্যাণ আচার্য

মন্ত্রোচ্চারণের সঙ্গে চলছে মালাবদলের প্রস্তুতি। আচমকা ছন্দপতন। বয়স কম থাকার কারণে পুলিশ-প্রশাসনের লোক এসে রুখে দিলেন বিয়ে। মুহূর্তে থামল সানাই। থমথমে বিয়েবাড়ি। সিনেমা নয়। নয় বাস্তবও। নাটকে এ ভাবেই তুলে ধরা হল সচেতনতার বার্তাবহ নাটক ‘পুতুলের বিয়ে’। অভিনেতারা সকলেই খুদে পড়ুয়া।

শুক্রবার লাভপুরের ইন্দাস প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই নাটক মঞ্চস্থ হয়। স্কুলে প্রশিক্ষণরত লাভপুরের একটি বেসরকারি শিক্ষক শিক্ষণ কলেজের শিক্ষার্থীদের লেখা এবং নির্দেশিত ওই নাটকে অভিনয় করে স্কুলের কচিকাঁচারা। নাটকে দেখানো হয়, কী ভাবে একটি মেয়েকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কী ভাবেই বা যৌতুকের আড়ালে চলছে পণপ্রথা। নাটকে রয়েছে, কী ভাবে বিয়ে রুখে স্কুলে ফেরানো হচ্ছে মেয়েটিকে। শুধু তাই নয়, স্কুলে ফেরা মেয়েটিকে শিক্ষিকারা পড়াশোনার ফাঁকে শেখাচ্ছেন কী ভাবে এলাকার পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। কী করেই বা বিপদ এড়িয়ে নিরাপদে চলাফেরা করতে হয়।

ওই নাটকে অভিনয় করে উচ্ছ্বসিত কুশীলবেরা। এ দিন পাত্রীর ভূমিকায় ছিল তৃতীয় শ্রেণির বন্দনা দাস, পাত্র একই ক্লাসের আকাশ সূত্রধর, পুরোহিত সেজেছিল দ্বিতীয় শ্রেণির প্রীতম সূত্রধর। তারা বলে, ‘‘এত দিন বাল্যবিবাহ সম্পর্কে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম কথা শুনেছিলাম। আমাদের স্কুলেও সচেতনতা শিবির হয়েছিল। তখন অত গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু নাটক করতে গিয়ে বাল্যবিবাহের কুফলের বিষয়টি মনে গেঁথে গেল।’’

ছেলেমেয়েদের অভিনয় দেখে খুশি বাবা-মায়েরাও। সপ্তম দাস, শীলা মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘চোখের সামনে কোনও মেয়ের বিয়ে বন্ধ হয়ে গেলে খুব খারাপ লাগত। কিন্তু বাল্যবিবাহের আইনি দিক নিয়ে কখনও মাথা ঘামাইনি। এই নাটক অনেকের চোখ খুলে দেবে।’’

নাটকের নির্দেশক তথা রচয়িতা শিক্ষক-শিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষার্থী প্রতীপ ঘোষাল, সুদীপ্তা চন্দ্র, সুস্মিতা সেন জানান, বাল্যবিবাহ রোখার ভাবনা জনমানসে ছড়িয়ে দিতেই এই প্রয়াস।

বর্তমানে জেলায় বাল্যবিবাহ মোকাবিলার কাজ করে চলেছে চাইল্ড লাইন। ওই সংস্থার তরফে ফজলুল হক বলেন, ‘‘এই রকম নাটক প্রদর্শন আমাদের কাজের ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হবে।’’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিহির শীল, সহকারী শিক্ষক শুভেন্দু মণ্ডল, সায়ন চৌধুরী জানান— ‘‘শুধু নাটক নয়, এ দিন আরও অনেক সমাজ সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে।’’ লাভপুর দক্ষিণ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সব্যসাচী ঘোষ বলেন, ‘‘নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই ধরণের অনুষ্ঠান ছাত্রাবস্থা থেকে পড়ুয়াদের মধ্যেও সচেতনতা বোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।’

School Student Drama Child Marriage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy