E-Paper

কার্তিক-মহারাজের সঙ্গে ওয়েবকুপা নেতা, গেল পদ

ওয়েবকুপা সূত্রে খবর, মাঙ্গিলালকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় কবি জয়দেব কলেজের শিক্ষক দীনবন্ধু মণ্ডলকে সংগঠনের জেলা সভাপতি করা হয়েছে।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:০৬
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে এই পোস্ট।

সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে এই পোস্ট।

ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী স্বামী প্রদীপ্তানন্দ তথা কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল একাধিক বার ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠতা’র অভিযোগ তুলেছে। এ বার সেই কার্তিক মহারাজের ‘আশীর্বাদ’ নেওয়ার পরই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল বীরভূমের তৃণমূল সমর্থিত কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন ওয়েবকুপার জেলা সভাপতি মাঙ্গিলাল তাপাড়িয়াকে। কার্তিক মহারাজের সঙ্গে মাঙ্গিলালের ছবি সমাজমাধ্যমে আসার পরই তা নিয়ে জোর চর্চা হয়। তবে প্রকাশ্যে ওয়েবকুপার একাংশের দাবি, মাঙ্গিলাল নিজেই অব্যাহতি চেয়েছিলেন।

ওয়েবকুপা সূত্রে খবর, মাঙ্গিলালকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় কবি জয়দেব কলেজের শিক্ষক দীনবন্ধু মণ্ডলকে সংগঠনের জেলা সভাপতি করা হয়েছে। জেলা তৃণমূলের সুপারিশে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ব্রাত্য বসু শনিবারই দীনবন্ধুকে জেলা সভাপতি নির্বাচিত করেছেন বলে জানানো হয়েছে। দীনবন্ধু বলছেন, ‘‘এতদিন সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয় ভাবে ছিলাম। আরও দায়িত্ব বাড়ল।’’

ওয়েবকুপা গঠনের সূচনা লগ্ন থেকে সক্রিয় ভাবে ছিলেন সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের শিক্ষক মাঙ্গিলালও। ২০২০ সাল থেকে তিনি সংগঠনের জেলা সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পরিচালন সমিতির সদস্যও। তৃণমূল ঘনিষ্ঠ ওই শিক্ষক অতিরিক্ত দায়িত্বে রেজিস্ট্রার হিসেবে বোলপুরে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বও সামলাচ্ছেন।

গত ১৬ তারিখ বোলপুরে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বার্ষিক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন সম্প্রতি পদ্মশ্রী প্রাপক কার্তিক মহারাজ। সেখানে গিয়ে কার্তিক মহারাজের পা ছুঁয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ নেন মাঙ্গিলাল। তিনি নিজেই ছবিটি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন। তারপরই বিতর্ক শুরু হয়। কয়েক মাস আগে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ওয়েবকুপা থেকে বহিষ্কৃত মণিশঙ্কর মণ্ডল নামে এক শিক্ষক ওই ছবি পোস্ট করে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি লেখেন, ‘‘বীরভূম জেলার ওয়েবকুপা-র সভাপতি আশীর্বাদ নিচ্ছেন সাম্প্রদায়িক বিভেদকামী শক্তি বিজেপির মুখপাত্র কার্তিক মহারাজের থেকে। শস্যের মধ্যেই ভূত।’’ সেই সঙ্গে মণিশঙ্কর প্রশ্ন তোলেন, ‘‘মাঙ্গিলাল এবং তাঁকে ওই পদের জন্য যিনি মনোনীত করলেন উভয় ব্যক্তিই কি কার্তিক মহারাজের আশীর্বাদধন্য?’’

ঘটনাচক্রে এর কয়েকদিনের মধ্যেই পদ খোয়ালেন মাঙ্গিলাল। তাই কার্তিক মহারাজের সঙ্গে ছবির জন্যই মাঙ্গিলালের পদ গেল কি না সেই প্রশ্ন নিয়ে জোর চর্চা চলছে। মাঙ্গিলাল নিজে এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তবে তা মানতে নারাজ ওয়েবকুপা-র নতুন রাজ্য কমিটির অ্যাসোসিয়েট সেক্রেটারি প্রলয় নায়েক। তিনি বলেন, ‘‘মাঙ্গিলাল স্যর দীর্ঘদিন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। কলেজে শিক্ষকতার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত পদ সামলাচ্ছেন। তিনি অব্যাহতি চাইছিলেন। সে জন্য জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে নতুন নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল ১৫ তারিখ।সেটাতে সিলমোহর দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, অহেতুক জল ঘোলা হচ্ছে।

কার্তিক মহারাজের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওই অনুষ্ঠানে প্রায় ২০ হাজার মানুষ এসেছিলেন। অনেকেই আশীর্বাদ নিয়েছেন। তার মধ্যে কে আশীর্বাদ নিল আর কে কার কাছে ব্রাত্য হল সেটা বলা কঠিন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Bharat Sevashram Sangha

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy