অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো এসআইআর নিয়ে আলোচনার জন্য জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন আহ্বায়ক অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন কমিটির দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য কাজল শেখ এবং বিকাশ রায়চৌধুরী। কেন তাঁরা ছিলেন না, এ নিয়ে সিউড়ির বিধায়ক বিকাশের জবাব মেলেনি। তবে জেলা সভাধিপতি কাজল জানিয়েছেন, তিনি গিয়েছিলেন ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। কারণ, ওই ‘কর্মসূচি’ ছিল তাঁর পূর্ব নির্ধারিত!
আগামী ৪ নভেম্বর থেকে নির্বাচন কমিশনের নিযুক্ত বুথ লেভেল অফিসারেরা (বিএলও) এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করবেন। তার আগে গত শুক্রবার দলের প্রায় ১৮ হাজার নেতার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। তাঁর নির্দেশ, বিএলও-কে সারা ক্ষণ নজরের মধ্যে রাখতে হবে। তিনি যখন যাঁর বাড়িতে যাবেন, তখন সঙ্গে থাকতে হবে দলের নিযুক্ত বুথ লেভেল এজেন্ট-২-কে (বিএলএ-২)। ওই বৈঠক থেকে অনুব্রতকে তিনি সকলকে (বীরভূম জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব) নিয়ে চলার বার্তা দেন। অভিষেকের ওই বৈঠকের পরদিনই শনিবার বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক বসে। অনুব্রতের পৌরহিত্যে ওই বৈঠকে কাজল এবং বিকাশ ছাড়া কমিটির সব সদস্যই ছিলেন। এসআইআর নিয়ে কেষ্ট এবং কাজলের ভিন্ন বক্তব্যের আবহে জেলা পরিষদের সভাধিপতির অনুপস্থিতি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। দলের অন্দরে অনেকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দিচ্ছেন।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শনিবার কোর কমিটির বৈঠকে এসআইআরের বাস্তবায়ন নিয়ে নেতৃত্ব একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অভিষেকের নির্দেশ মেনে জেলার প্রতিটি অঞ্চল এবং পুরসভা এলাকায় সহায়তাকেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি বিএলও-দের সঙ্গে বিএলএ-রাও মাঠে থাকবেন এবং সেটা আইনসঙ্গত বলেই দাবি করেছেন শাসকনেতারা। সেই সঙ্গে এসআইআর নিয়ে যাতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাজ না-করে, কেউ যাতে বিভ্রান্ত না-হন, সে জন্য নেতা এবং কর্মীদের আলাদা আলাদা করে দায়িত্ব ভাগ করে দেন কেষ্ট। এ সবের মধ্যে কাজল কেন নেই? জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির কেউ জবাব দেননি।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, সন্ধ্যায় কাজলকে দেখা যায় একটি নকআউট ফুটবল প্রতিযোগিতার মঞ্চে বসে রয়েছেন। কোর কমিটির বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করায় তাঁর জবাব, ‘‘বীরভূম জেলায় প্রচুর খেলার প্রতিযোগিতা হয়। তা ছাড়া সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সরকারি হোক বেসরকারি— যে কোনও খেলার অনুষ্ঠানে আমি আমন্ত্রণ রক্ষা না-করে থাকতে পারি না। মিলন সংঘের নকআউট ফুটবল প্রতিযোগিতা ছিল। তাই এসেছিলাম।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কোর কমিটির বৈঠক দু’দিন আগে ডাকা হয়েছে। কিন্তু এটা পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। একে অবহেলা করে আমি কোর কমিটির বৈঠকে যেতে পারি না। তা ছাড়া আমাদের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পুঙ্খনাপুঙ্খ ভাবে এসআইআর নিয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। সেগুলো আমার মাথায় আছে। তাই এই বৈঠকে না গেলেও সেটা এমন কিছু বিষয় নয়।’’