গোলপোস্টে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি লাগিয়ে অপমান করার অভিযোগ। সংখ্যালঘুদের খেলোয়াড় হিসেবে দলে নেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। বীরভূমে বিজেপি আয়োজিত নরেন্দ্র কাপ নিয়ে এই দুই বিতর্কের পাশাপাশি উঠেছে আর এক প্রশ্ন। বোলপুরে একটি রাজনৈতিক দল আয়োজিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য বিশ্বভারতীর মতো কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কেন নিজেদের মাঠ দিল! যদিও এই কর্মসূচি অরাজনৈতিক বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। খেলাধুলোর কথা মাথায় রেখেই মাঠ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। সংখ্যালঘুদের দলে না নেওয়ার অভিযোগও মানেননি বিজেপির স্থানীয় নেতারা।
বীরভূমের ৩৯টি দল নরেন্দ্র কাপে যোগ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সিউড়িতে উদ্বোধন পরে, শুক্রবার বিশ্বভারতীর পল্লিশিক্ষা ভবনের মাঠে খেলা শুরু হয়। ছিলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। যেখানে মাঠ জুড়ে কিছুটা উঁচুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি টাঙানো হয়েছে, সেখানে গোলপোস্টে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং স্বামী বিবেকানন্দের ছবি দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। যদিও পরে মাঠ থেকে রবীন্দ্রনাথের ছবি সরিয়েনেওয়া হয়।
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “এরা সব জায়গায় বাংলাকে ছোট করে। বিশ্বভারতীতেও রবীন্দ্রনাথকে গোলপোস্টে ঠাঁই দিয়েছে। আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীর ভাবনা ওদের বিরোধী। আরএসএসের এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সরব হতে হবে।” জগন্নাথ পাল্টা বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক আয়োজন। আমরা বোমা বাঁধা, খুন করা, ঘর পোড়ানোর রাজনীতির বিস্তার চাই না।’’
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষের দাবি, ‘‘খেলাধুলোর কথা মাথায় রেখেই মাঠ দেওয়া হয়েছে। রাজনীতি দেখে নয়। ১২-১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাঠ দেওয়া হয়েছে। ১৭ তারিখ বিশ্বভারতীর শিল্পোৎসব রয়েছে। তাই সে দিন মাঠ দেওয়া হয়নি।’’
আগামী সোমবার থেকে রামপুরহাটে নরেন্দ্র কাপের খেলা শুরু হবে। তার আগে রামপুরহাট শহরের বাসিন্দা ও ক্রীড়াপ্রেমী ইউসুফ আলির দাবি, এই প্রতিযোগিতায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ব্রাত্য করে রাখা হচ্ছে। দলে তাঁদের ‘নেওয়া যাবে না’ বলা হচ্ছে। সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে অভিযোগও করেন ইউসুফ। যদিও এই ব্যাপারে প্রতিযোগিতার সিউড়ি মহকুমার আহ্বায়ক তথা বিজেপি নেতা শ্যামসুন্দর গড়াই বলেন, “এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিভিন্ন দলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরখেলোয়াড়েরা খেলছেন।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)