Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Jhalda

তপন খুনে সান্ত্বনাও নয়! অধীরের নিশানায় মমতা

তৃণমূলের কাছ থেকে কংগ্রেসের পুরসভা দখলের পিছনেও তাঁর লাগাতার আইনি লড়াইয়ের অবদান অনস্বীকার্য।

পূর্ণিমা, অধীর, চেল্লা কুমার, কৌস্তভ, নেপাল (বাঁ দিক থেকে)। নিজস্ব চিত্র

পূর্ণিমা, অধীর, চেল্লা কুমার, কৌস্তভ, নেপাল (বাঁ দিক থেকে)। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:২৪
Share: Save:

না থেকেও যেন তিনি রইলেন শনিবার কংগ্রেসের জনসভায়। এক বছর আগে পুরবোর্ড গঠনের মুখে আততায়ীর গুলিতে নিহত ঝালদার দলীয় পুরপ্রতিনিধি তপন কান্দুর নাম এ দিন বারবার কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তৃতায় ঘুরে ফিরে এসেছে।

গত বছর ১৩ মার্চ হাঁটতে বেরিয়ে আততায়ীদের গুলিতে খুন হন তপন। প্রথমে তদন্তে নামে জেলা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার নেয় সিবিআই। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তপনের দাদা নরেন কান্দু, ভাইপো দীপক কান্দু-সহ মোট সাত জনকে গ্রেফতার হয়।

এ দিন ঝালদার হাটতলার ভরা সভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ওই খুনের প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে অভিযোগ করেন, ‘‘একটা বোন যখন তাঁর স্বামীকে হারালেন, কই আপনার তরফে ন্যূনতম সান্ত্বনাটুকুও ওই মহিলা তো পাননি! দিদিভাই একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অন্তত ফোন করেও তাঁকে ভরসা জোগাতে পারতেন। তখন কি আপনার মনে হয়নি মানবিকতাকে হত্যা করলেন? মাত্র ১২সদস্যের একটি পুরসভার দখলের জন্য হত্যা! এটা কোন রাজনীতি?’’ তপন খুনের পরে তাঁর বাড়িতে এসে অধীরের অভিযোগ ছিল, ‘মার্ডার ফর মেজরিটি’। এআইসিসির তরফে রাজ্যের পর্যবেক্ষক তথা সাংসদ চেল্লা কুমারও সভায় অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতা দখলের জন্য ওই পুরপ্রতিনিধিকে খুন করেছে।’’

অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া দাবি করেন, ‘‘দল খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। ওই ঘটনায় আমরাও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছিলাম। সামনে নির্বাচন। তাই সেই খুনের প্রসঙ্গকে টেনে আনা হচ্ছে। মানুষ এতে বিভ্রান্ত হবেন না।’’

তপন হত্যার সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাই কোর্টে আইনি লড়াই করেছিলেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। তৃণমূলের কাছ থেকে কংগ্রেসের পুরসভা দখলের পিছনেও তাঁর লাগাতার আইনি লড়াইয়ের অবদান অনস্বীকার্য। এ দিনের সভায় কৌস্তভও ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘যারা তপনের জীবন নিল, যতদিন না তাদের শাস্তি হচ্ছে শান্তি নেই। এ লড়াই চলবে। তারা ভেবেছিল তপনকে খুন করে কংগ্রেসকে শেষ করা যাবে। সেটা হয়নি। ঝালদা পুরসভার ক্ষমতা দখল করেছে কংগ্রেস। তৃণমূলের চোখে চোখ রেখে লড়াই করার ক্ষমতা দেখিয়েছে ঝালদা। এই ঝালদাই আগামিদিনে পথ দেখাবে।’’

কৌস্তভ যখন বলছেন, ‘‘কে বলেছে তপন কান্দু নেই? ঠিক এখানেই তাঁর অশরীরি আত্মা রয়েছে।’’ তখন তপনের সহধর্মিনী পূর্ণিমা কান্দু কেঁদে ফেলেন। চোখ মুছতে গিয়ে মাত্র এক মিনিটের বক্তৃতাতে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনিও বলেন, ‘‘দুঃসময়ে আপনারা যেমন কাছে ছিলেন, আমরাও আপনাদের পাশে থাকব।’’ পরে তিনি বলেন, স্বামী আর ফিরবে না জানি। তবে সুবিচার পাব। এই আশাতেই দিন গুনছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jhalda Adhir Ranjan Chowdhury Congress TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE