উধাও পাঁচিল। ফাইল চিত্র।
শান্তিনিকেতনের সুরশ্রীপল্লিতে আকাশবাণী কেন্দ্রের সামনে বিশ্বভারতীর তৈরি অসমাপ্ত পাঁচিল কে বা কারা ভেঙে দিয়েছে রাতারাতি। এ বার সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করল প্রশাসন। ফলে বিশ্বভারতীর পক্ষে নতুন করে পাঁচিল নির্মাণের পথ বন্ধ হল। প্রশাসনের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। প্রশাসন সূত্রের দাবি, পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষে নিজেদের সীমানা চিহ্নিত করতে আকাশবাণী কেন্দ্রের সামনে একটি পাঁচিল নির্মাণ শুরু করেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ওই এলাকার সাধারণ মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। ঘটনার কথা জানতে পেরে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি ঘটনাস্থলে আসেন তৎকালীন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার। তখনই কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। এর পরে কাজ বন্ধ হলেও অর্ধনির্মিত পাঁচিলের কারণে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এই ঘটনার প্রায় ১৫ মাস পরে দিন কয়েক আগে কেউ বা কারা ওই পাঁচিল ধূলিসাৎ করে দেয়। তাতে ওই পথ চলাচলের জন্য মুক্ত হয়ে যায়। এই ঘটনায় বিশ্বভারতীর তরফে শান্তিনিকেতন থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ওই স্থানে নতুন করে পাঁচিল নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানা যায়। এতে ওই এলাকার মানুষের চলাচলে বাধার সৃষ্টি হতে পারে এবং শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে এই আশঙ্কায় রাতারাতি ১৪৪ ধারা জারি করেন বোলপুর মহকুমাশাসক অয়ন নাথ। রাস্তার দু’ধারের দেওয়ালে সেই নির্দেশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, ওই রাস্তা পাঁচ দশকেরও বেশি বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল, শান্তিনিকেতন থানা প্রভৃতি স্থানে যাওয়ার জন্য এবং দমকল ঢোকার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
প্রশাসনের নির্দেশে আরও দাবি করা হয়েছে, শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ একটি চিঠিতে জানিয়েছে, ওই পাঁচিল নির্মাণের জন্য কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। পাঁচিল তৈরি হলে সাধারণ মানুষের সমস্যার পাশাপাশি এলাকার শান্তিও বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কার কথাও জানানো হয়েছে। এই সমস্ত সম্ভাবনা ভেবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে পর্যন্ত যে কোনও রকম নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ১৪৪ ধারা যাতে ঠিক ভাবে পালিত হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শান্তিনিকেতন থানার ওসিকেও।
গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর এক আধিকারিকের মন্তব্য, “বিশ্বভারতীকে কিছু না জানিয়ে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে দেওয়া হয়েছে। যখন মেলার মাঠের পাঁচিল ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, তখন বারবার ১৪৪ ধারা চাওয়া হলেও দেওয়া হয়নি। আর এখন আমরা কেউ চাইনি কিন্তু, রাত দুটোর সময় ১৪৪ ধারা জারি করে দিয়েছে। পাঁচিল যখন লোকে ভেঙে দিল, তখন প্রশাসন পদক্ষেপ নিল না। আর পুনর্নির্মাণের চেষ্টা আটকে দেওয়া হল।’’ নির্দেশ দেওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্যও শোনা হয়নি এমনকি তার কপিও পাঠানো হয়নি বলে অভিযোগ বিশ্বভারতীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy