বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতা সেকেন্দার খানের হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হলেন মূল অভিযুক্ত। ধৃত নাসিম শেখও তৃণমূল নেতা। দুই পুত্রের পর পুলিশের হাতে পাকড়াও হয়েছেন তিনি।
গত সোমবার রাতে বাঁকুড়ার সোনামুখী থানার চকাই গ্রামে খুন হন তৃণমূল নেতা সেকেন্দার। বাইকে করে বাড়ি ফেরার পথে গুলি লেগে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। চকাই গ্রামের তৃণমূল বুথ আহ্বায়কের খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হন দুই সহোদর, হাসিম শেখ এবং ইব্রাহিম শেখ। মঙ্গলবার রাতে তাঁদের বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে পুরুলিয়ার মানবাজার থানার পাথরকাটা গ্রামে টাইগার নামে এক জনের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে নাসিমকে। টাইগার তাঁর বন্ধু বলে জানা গিয়েছে। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে নাসিমকে। বুধবার ধৃতকে তোলা হবে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে।
জানা গিয়েছে, পুলিশ তাঁর খোঁজ পেয়েছে বুঝতে পেরে মানবাজারে বন্ধুর বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন নাসিম। তাঁকে প্রায় ধাওয়া করেই পাকড়াও করা হয়েছে। তবে ঘটনার প্রায় দেড় দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও আগ্নেয়াস্ত্রটির সন্ধান পায়নি পুলিশ। সে জন্য ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি খুনের সময় বাবা ও দুই ছেলের তিন জনই ঘটনাস্থলে ছিলেন, না কি তাঁরা স্রেফ ষড়যন্ত্র করেছিলেন, তারও খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সেকেন্দারের দেহের ময়নাতদন্ত করানো হয়েছে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। তৃণমূল নেতার দেহে মোট তিনটি গুলির আঘাতের চিহ্ন মিললেও তাঁর শরীর থেকে দু’টি বুলেট উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সব ক’টি বুলেটই চালানো হয়েছে ৭.৬৫ মিলিমিটার বোরের অটোমেটিক রিভলভার থেকে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে চকাই গ্রামেরই দুই বাসিন্দাকে পাকড়াও করে পুলিশ। ধৃত দুই ভাইকে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে তাঁদের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
আরও পড়ুন:
সেকেন্দার খুনের কারণ হিসারে প্রাথমিক ভাবে গোষ্ঠীকোন্দলকেই দায়ী করা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, মাস ছয়েক আগে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের ধৃত নাসিম শেখের দিকে গুলি চলেছিল। আহত হয়েছিলেন ওই তৃণমূল নেতা। অভিযোগ উঠেছিল আর এক তৃণমূল নেতা সেকেন্দারের বিরুদ্ধে। সে সময় গ্রেফতারও হন তিনি। সম্প্রতি তিনি জেল থেকে ছাড়া পান। বদলা নিতেই অনুগামীদের নিয়ে সেকেন্দারকে তিনি খুনের পরিকল্পনা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই তৃণমূল নেতা খুনে আরও কেউ যুক্ত রয়েছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘প্রথম দিনেই আমরা দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছি। গত কাল (মঙ্গলবার) রাতে আমরা পুরুলিয়া জেলা পুলিশের সহায়তায় নাসিম শেখকে ধরেছি। এখন তদন্ত চলছে। অবশ্যই আরও কেউ জড়িত রয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘দু’জনের পুরনো শত্রুতা ছিল। সেটা পারিবারিক এবং ব্যক্তিগতও হতে পারে।’’