Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Bishnupur

সিপিএমের মিছিলে বোমা ছোড়ার নালিশ

সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, বোমাবাজির পরে, লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়।

মিছিলে পড়ল বোমা। নিজস্ব চিত্র।

মিছিলে পড়ল বোমা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৫৭
Share: Save:

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কৃষি আইনের প্রতিবাদে সিপিএমের মিছিলে বোমাবাজির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের বগডহরার ঘটনা।

সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, বোমাবাজির পরে, লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। তাতে আহত হন সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য ষড়ানন পান্ডে, নেতা-কর্মী গোপাল ধীবর, রজব আলি খান, বিশ্বনাথ গুঁই, দিলীপ রায়, লালমোহন ঘোষ প্রমুখ। পুলিশের গাড়ি করেই তাঁদের বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে মিছিলে পুলিশ থাকা সত্ত্বেও কেন তারা হামলাকারীদের ঠেকায়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএম নেতৃত্ব।

যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, মিছিল থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক স্লোগান ও গালিগালাজ দিচ্ছিলেন সিপিএম কর্মীরা। তাঁদের পার্টি অফিস ভাঙচুরও করা হয়। তৃণমূল কর্মীরা বচসা করলেও, মারধর করেননি।

এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সিপিএমের একটি মিছিল বিষ্ণুপুরের খড়কাটা থেকে বগডহরা হয়ে জামশুলি যাচ্ছিল। প্রায় সাতশো নেতা-কর্মী নিয়ে সিপিএমের প্রাক্তন দুই বিধায়ক স্বপন ঘোষ ও মনোরঞ্জন পাত্র বগডহরা গ্রামের কাছে যেতেই তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল লক্ষ করে বোমা, ইট, পাথরের টুকরো ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।

বিষ্ণুপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য ষড়ানন পান্ডে দাবি করেন, “কৃষি আইনের প্রতিবাদে আমরা মিছিলে হাঁটছিলাম। পুলিশের অনুমতি নিয়েই এই মিছিল। মিছিলের সামনে ও পিছনে পুলিশ ছিল।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আচমকা বগডহরার তৃণমূল কার্যালয় থেকে কয়েকজন এলোপাথাড়ি বোমা মারতে থাকে মিছিল তাক করে। অনেকেই ভয়ে ছুটে পালিয়ে যান। আমাদের মতো যাঁরা দাঁড়িয়েছিলাম, তাঁদের লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারতে থাকে তৃণমূলের গুন্ডারা। পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকেও রক্ষা করার কোনও চেষ্টা দেখায়নি। তবে রক্তাক্ত সিপিএম কর্মীদের হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশই।”

সিপিএমের বিষ্ণুপুরের প্রাক্তন বিধায়ক স্বপন ঘোষ দাবি করেন, “তৃণমূলের নেতারা কয়েকদিন ধরেই আমাদের লোকজনকে হুমকি দিচ্ছিল। আমরা তা পুলিশকে লিখিত ভাবে আগেই জানিয়েছিলাম। আট-দশ জন তৃণমূলের গুন্ডাকে জব্দ করার ক্ষমতা নেই দু’গাড়ি পুলিশের? আমাদের মোট ১৯ জন কর্মী আহত হয়েছেন। তার মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন প্রায় ন’জন। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করছি।”

এ দিকে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী দাবি করেন, “সিপিএমের মিছিল থেকে প্ররোচনামূলক কথাবার্তা বলার পরেই তৃণমূল কার্যালয় থেকে কয়েকজন বেরিয়ে মিছিলে ধাক্কাধাক্কি করেন। উভয় পক্ষের মধ্যে বচসার জেরে সিপিএম কর্মীদের জনা পাঁচ-ছয় আহত হন। পুলিশ সক্রিয় ছিল। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে বোমা ছোড়া হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে।’’ তিনি জানান, এ নিয়ে কোনও অভিযোগ পুলিশের কাছে জমা পড়েনি।

স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আবু তাহের মণ্ডল দাবি করেন, “সিপিএমের মিছিল থেকেই আমাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। তৃণমূলের পতাকাও ছিঁড়ে দেওয়া হয়। এরপরেই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে, বচসা শুরু হয়। তাতেই দু’পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। সিপিএমের লোকেদের হাতেই লাঠি, তির, বোমা, রড ছিল। মিছিল থেকে গালিগালাজ না করলে এ রকম হত না।” তৃণমূলের বিষ্ণুপুর ব্লক সভাপতি সুশান্ত মুখোপাধ্যায়ও দাবি করেন, “সিপিএম বাইরে থেকে দুষ্কৃতী নিয়ে এসে ঝামেলা করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bishnupur cpm BJP Bombing TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE