Advertisement
E-Paper

পুরুলিয়া জেলা পরিষদ, মাইনে নিয়ে বিধি ভাঙার অভিযোগ

লিখিত অভিযোগে উত্তমবাবুর দাবি, তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মীরা বাউরি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ কর্মাধ্যক্ষ হাজারি বাউরি, দু’জনেই প্রাথমিক শিক্ষক।

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০১:২৭

তৃণমূলের সহ-সভাধিপতি এবং এক কর্মাধ্যক্ষ বিধি বহির্ভূত ভাবে প্রাথমিক স্কুলের মাইনে তুলছেন বলে অভিযোগ করলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের কংগ্রেস সদস্য উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যাওয়া ওই সদস্য প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করে তদন্ত দাবি করেছেন। জেলাশাসক অলকেশ প্রসাদ রায় বলেন, ‘‘এই মর্মে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত হবে।’’

লিখিত অভিযোগে উত্তমবাবুর দাবি, তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মীরা বাউরি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ কর্মাধ্যক্ষ হাজারি বাউরি, দু’জনেই প্রাথমিক শিক্ষক। এবং দু’জনেই সেই পেশার মাস মাইনে নিচ্ছেন সরকার থেকে, যা সরকারি নিয়মের বিরোধী।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা যদি জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি কিংবা স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হতেই পারেন। কিন্তু, তাঁরা যত দিন পর্যন্ত ওই পদে আসীন থাকবেন, তত দিন তাঁরা বিনা বেতনে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি (এক্সট্রা অর্ডিনারি লিভ) পাবেন। বিনা বেতনে ওই ছুটির মেয়াদ হবে পাঁচ বছর।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলে টিকিটে জিতে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ হয়েছিলেন উত্তমবাবু। গত বিধানসভা নির্বাচনের পরে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে দল তাঁকে বহিষ্কার করে। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থাও আনা হয়। তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন।

উত্তমবাবুর দাবি, ‘‘জেলা পরিষদের কাজের জন্য সহ-সভাধিপতি এবং ওই কর্মাধ্যক্ষকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ এক্সট্রা অর্ডিনারি লিভ মঞ্জুর করেছে। নয়ম অনুসারে, তাঁরা বিনা বেতনে ছুটি পাবেন। কিন্তু ওই দু’জনই সরকারি নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে মাসের পর মাস প্রাথমিক শিক্ষকতার মাইনে এবং জেলা পরিষদের সাম্মানিক তুলে যাচ্ছেন।’’ মাইনে বাবদ যে অর্থ সরকারি কোষাগার থেকে ওই দু’জন নিয়েছেন, তা ফেরত দেওয়ার দাবিও তুলেছেন উত্তমবাবু।

সহসভাধিপতি মীরাদেবী জয়পুর ব্লকের খেদাটাঁড় প্রাথমিক স্কুল এবং কর্মাধ্যক্ষ হাজারি বাউরি রঘুনাথপুরের কাদামাড়রা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। অভিযোগ প্রসঙ্গে এই দুই সদস্যই দাবি করেছেন, তাঁরা জেলা পরিষদের সাম্মানিক গ্রহণ করেন না। সহ-সভাধিপতি বলেন, ‘‘আমি প্রতি সোমবার স্কুলে যাই। তাই স্কুলের মাইনে নিই। তা ছাড়া, অন্য সময়েও ফাঁকা সময় পেলে স্কুলে যাই।’’ তাঁর আরও দাবি, জেলা পরিষদের দায়িত্ব নেওয়ার সময় তাঁকে জেলা পরিষদের সম্মানিক ও প্রাথমিক শিক্ষকতার মাইনে, যে কোনও একটি নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তিনি শিক্ষিকার মাইনেই নিচ্ছেন।

হাজারিবাবু বলেন, ‘‘আমাকে বলা হয়েছিল মাসে ১২ দিন স্কুল করতে হবে। আমি সেটা করারই চেষ্টা করি। জেলা পরিষদের সাম্মানিক না নিয়ে আমি শিক্ষকের মাইনেটাই নিই।’’

পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি হেমন্ত রজক বলেন, ‘‘এই বিষয়টি নিয়ে আগেও একবার খোঁজখবর করা হয়েছিল। তা ছাড়া, যখন ওই দু’জন জেলা পরিষদের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন আমি শিক্ষা সংসদের সভাপতি ছিলাম না। তদন্তের বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) দেখবেন।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) অলোক মহাপাত্র বলেন, ‘‘আমি সবে দায়িত্ব নিয়েছি। এ বিষয়ে কিছু জানা নেই।’’

অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অরিন্দম দত্ত জানিয়েছেন, মীরাদেবী ও হাজারিবাবু জেলা পরিষদ থেকে কোনও সাম্মানিক নিচ্ছেন না।

rules brak Zilla parishad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy