E-Paper

গল্প শোনালেন শতায়ু প্রতিভা

প্রতি শনিবার আলিগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিবেশ অন্য রকম থাকে। সেখানে বসে ‘আনন্দ পরিসর’। ছাত্রছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করা হয় সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে। পাঠদানের এই বিশেষ প্রক্রিয়া স্কুলটির নিজস্ব উদ্যোগ।

দেবাশিস পাল

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৫ ০৭:২২
ঠাকুমার গল্প আলিগ্রাম প্রাথমিক স্কুলে।

ঠাকুমার গল্প আলিগ্রাম প্রাথমিক স্কুলে। ছবি: কল্যাণ আচার্য।

তাঁর বয়স ১০৩ বছর। বীরভূমের নানুরের আলিগ্রামের বাসিন্দা প্রতিভা রায় পরাধীন ও স্বাধীন, দুই ভারতেরই সাক্ষী। তাঁর স্মৃতিতে রয়েছে অনেক গল্প। সেই গল্পের ভান্ডারই উজাড় করে দিলেন কচিকাঁচাদের জন্য। শনিবার তিনি হাজির হয়েছিলেন নানুর দক্ষিণ চক্রের আলিগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সুন্দর এক ‘গল্প ঠাকুরমার আসর’বসল স্কুলে।

প্রতি শনিবার আলিগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিবেশ অন্য রকম থাকে। সেখানে বসে ‘আনন্দ পরিসর’। ছাত্রছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করা হয় সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে। পাঠদানের এই বিশেষ প্রক্রিয়া স্কুলটির নিজস্ব উদ্যোগ। এ দিন স্কুলে আমন্ত্রণ জানানো হয় আলিগ্রামের বয়ঃজ্যেষ্ঠ মানুষ প্রতিভাকে। তিনি তাঁর শৈশবের কথা, রূপকথার ব্যঙ্গমা-ব্যঙ্গমীর গল্প, ছড়া শোনান খুদে পড়ুয়াদের। ছাত্রছাত্রীরাও পরিবেশন করে নৃত্য, গান ও কবিতা।

কলকাতায় অভিজাত পরিবারে বড় হওয়া প্রতিভার। তাঁর জীবনের নানা কাহিনি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছিল ছোটরা। পরাধীন ভারত, দেশের স্বাধীনতা, ঠাকুরমার স্কুলের কথা নিয়ে আলোচনা চলে কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে শীতল ছায়ায় বসে। প্রতিভার কথায়, “একশো পেরিয়ে এসে ছোটবেলায় ফিরে যাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করলাম, খুব খুশি হয়েছি। আগামী দিনে আবার আসব গল্প শোনাতে ও শুনতে।”

স্কুলের পক্ষ থেকে এই আসরের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গল্পবুড়ির আসর’। এ দিন স্কুলে প্রতিভা ছাড়াও ছিলেন রায় পরিবারের চার প্রজন্ম— প্রতিভার ছেলে সমীরকুমার রায়, নাতি সায়ন রায়, নাতবৌ অরিত্রিকা ভট্টাচার্য রায় ও প্রপৌত্র ইস্মিত রায়।

আলিগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ঋক ঘোষ, ঋদ্ধিমান আচার্য, পঞ্চম শ্রেণির ঋষিতা মেটে ঠাকুরমার কাছে গল্প শুনে ভারী খুশি। স্কুলের প্রাক্তনী রাখী পাঠক, দেবনাথ মণ্ডল, অর্পণ দত্তও শামিল হয়েছিলেন এই উদ্যোগে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বদেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আনন্দ পরিসরের উৎকর্ষতা বৃদ্ধি ও শিশুদের মধ্যে শোনার ধৈর্য বাড়ানোর সঙ্গে কল্পনাপ্রবণ মনের বিকাশ ঘটাতেই এই উদ্যোগ। প্রত্যেক মাসেই আমন্ত্রণ জানানো হবে এক জন বয়ঃজ্যেষ্ঠকে।” নানুর দক্ষিণ চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক মাসকুর আলম আলসাবার কথায়, “মোবাইলের আসক্তি থেকে শিশুদের বার করতে এমন পদক্ষেপ জরুরি। এ ধরনের আসর অন্য স্কুলেও ছড়িয়ে দেব।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Old woman Nanoor

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy