মহালয়ার ভোরে শান্তিনিকেতনের ঘুম ভাঙাল গৌরপ্রাঙ্গণের ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের সুর। ফি বছরের মতো এ বারও রীতির অন্যথা হয়নি।
ভোর চারটে থেকে গৌরপ্রাঙ্গণে গিয়ে ‘আনন্দবাজার’-এর জন্য মাঠ সাজান পড়ুয়ারা। এর মাঝে যত বার ঢাকে কাঠি পড়েছে, ঢোল বেজেছে, এক ঝলক রাঙামাটির ধুলো উড়িয়ে এসে আবার স্টল সাজানোর কাজে লেগেছেন। দুপুর পেরিয়ে বিকেল হতেই নিজেদের হাতে তৈরি খাবার, হস্তশিল্পের পসার নিয়ে তৈরি ছিল শিশুবিভাগ থেকে শুরু করে গবেষক ছাত্রছাত্রীরা। ১০ টাকার ফুচকাও এ দিন অনায়াসে ২০ টাকায় বিক্রি হয়ে যায়। পাঁচ টাকার চায়ের দাম হয় দশেরও বেশি। তবু সব বিক্রি হয়ে যায়। এর পর একে একে সব বিক্রি হয়ে যেতেই থালা বাজিয়ে, ঢাকের তালে, সারিবদ্ধ হয়ে নাচ। কিছুটা এ ভাবেই ‘আনন্দবাজারের’ মধ্যে দিয়ে মহালয়া পালিত হল বিশ্বভারতীতে।
মহালয়ার দিনে এক দিনের এই মেলা ঠিক কবে শুরু হয়েছিল সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনও মত পাওয়া যায় না। জানা যায়, ১৩২৪ বঙ্গাব্দে নববর্ষের দিনে শান্তিনিকেতনে ছেলেদের আনন্দমেলা হয়েছিল। এর পরের বছর পৌষমেলার সময় হয় ‘বৌঠাকুরাণীর হাট’। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা এই মেলার আয়োজন করতেন। রবীন্দ্রনাথ জীবিত থাকাকালীন এক বার গরমের ছুটির আগেও এ রকম একটি মেলা হয়েছিল শান্তিনিকেতনে। পরে দেশ-বিদেশের আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা যখন দুর্গাপুজোর আগে বাড়ি যাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে উঠতেন, তার আগে তাঁদের আনন্দ দেওয়ার জন্য শুরু হয় এই আনন্দবাজার। এখন যদিও ‘আনন্দমেলা’ নামে পরিচিতি পেয়েছে এই মেলা।